গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বিজয় মিছল নিয়ে বিভিন্ন স্থানে হামলার ধারাবাহিকতায় বনঅফিসেও হামলা করে একদল জনতা। ভাঙচুর শেষে লুট করে গুলিসহ ১২টি আগ্নেয় অস্ত্র। থানায় পুলিশ না থাকায় পাঁচদিনেও গতকাল শনিবার পর্যন্ত লুন্ঠিত অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এতে অনিরাপত্তায় ভুগছে বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আর এ সুযোগে বনের জমি জবর-দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের হিরিক পড়েছে। এলাকাবাসী ও বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের তুপের মুখে প্রদত্যাগের পর দেশত্যাগের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সারা দেশে সারা দেশে বিজয় মিছিল ও আনন্দ মিছিল করে শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। এমন একটি বিজয় মিছিল নিয়ে একদল জনতা ওইদিন বিকাল ৩টার দিকে উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় কালিয়াকৈর রেঞ্জ ও চন্দ্রা বিট অফিসে প্রবেশ করে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মিছিলকারীরা ওই দুটি বন অফিসে ভাঙচুর চালায়। এ সময় অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেদের আত্মরক্ষার্থে দৌড়ে বনের ভিতর পালিয়ে যাওয়ায় সেখানে কোন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু অফিসের আসবাবপত্র, কাগজপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল, একটি গাড়ি ও ৫টি মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয় মিছিলকারীরা। এ সময় তারা অফিসে থাকা ৪টি শর্টগান ও ৮টি চাইনজ রাইফেলসহ মোট ১২টি আগ্নেয় অস্ত্রসহ ৮২৪ রাউন্ড গুলি লুট করে নিয়ে যায়। পরে ওই অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহম্মেদ এবং কালিয়াকৈর থানার ওসি এ এফ এম নাসিমসহ বনবিভাগের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষদের অবগত করে। কিন্তু এর আগের দিন রাতে হঠাৎ করেই পুলিশ থানা ছেড়ে চলে যায়। আর থানায় পুলিশ না থাকায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে পারেনি বনবিভাগ। এদিকে থানায় পুলিশ না থাকায় পাঁচদিনেও গতকাল শনিবার পর্যন্ত লুণ্ঠিত অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এতে অনিরাপত্তায় ভুগছে বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ সুযোগে বনের জমি জবর-দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের হিরিক পড়েছে। আর লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বনবিভাগে এক শ্রেণির দালাল চক্ররা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন। তবে লুণ্ঠিত অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে অফিসের নিরাপত্তার জোরদারের দাবি বনবিভাগের। কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, থানায় পুলিশ না থাকায় এখনো অভিযোগ দায়ের করা সম্ভব হয়নি। আর অস্ত্রগুলো উদ্ধার না হওয়ায় আমরাও অনিরাপত্তায় ভুগছি। ফলে বনবিভাগের জমি রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করতে পারছি না। তবে লুণ্ঠিত অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে অফিসের নিরাপত্তার জোরদারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। এবিষয়ে বিভাগীয় বনকর্মকর্তা বশির আল মামুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহম্মেদ জানান, অফিস ভাঙচুর, আগুন দিয়ে পুড়ানো ও ৮২৪ রাউন্ড গুলিসহ ১২টি অস্ত্র লুট করার বিষয়টি জানিয়েছে বনবিভাগ। তবে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।