ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাজিরায় বর্ষাকালীন সবজির ভালো ফলনের আশা কৃষকের

জাজিরায় বর্ষাকালীন সবজির ভালো ফলনের আশা কৃষকের

শরীয়তপুর জেলার শস্য ভাণ্ডারখ্যাত জাজিরা উপজেলায় এবার বর্ষাকালীন সবজির ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষক। এবার বর্ষাকালীন সবজি আবাদ মৌসুমের শুরুতে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হওয়ায় সময়মতো সবজি আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে। বিগত দুই বছর একানকার কৃষকরা সবজির দাম ভালো পাওয়ায় আবাদের পরিমাণও বৃদ্ধি করেছেন। উপজেলায় এবার গত মৌসুমের চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে বর্ষকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।

এবারের লক্ষ্যমাত্রা ৬৫০ হেক্টর ধরা হলেও আবাদ আরো বাড়বে বলে বলছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। এরইমধ্যে তুলনামূলক উঁচু জমিতে অধিক দাম পাওয়ার আশায় ১৩৫ হেক্টরে সবজি আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই বাজারে বর্ষাকালীন সবজি আসতে শুরু করবে বলে বলছেন কৃষক।

লক্ষ্যমাত্রার বাকি জমিতে আগস্ট মাসের মধ্যেই আবাদ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। জাজিরা উপজেলার মুলনা ইউনিয়নের মিরাশার গ্রামের কৃষক, কামাল হোসেন বলেন, বিগত দুই বছর সবজির দাম বেশি পাওয়ায় এবার বেশি পরিমাণ জমিতে সবজি আবাদ করছি। গত বছর দুই বিঘা জমিতে করলা আবাদ করেছিলাম। এবার আবাদ করেছি ৫ বিঘা জমিতে। প্রাকৃতি দুর্যোগ বা কোনো সংকট তৈরি না হলে বিঘাপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে এক লাখ ২০ হাজার থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।

একই উপজেলার গঙ্গানগর গ্রামের কৃষক রিফাত হোসেন আকন বলেন, গত বছর বর্ষাকালীন সবিজ আবাদ মৌসুমে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমাদের সেচ খরচ হয়েছিল বেশি। তবে এবার আবাদ মৌসুমে বৃষ্টি হওয়ায় সেচ খরচ বেবে যাবে। ফলে আমাদের উৎপাদন ব্যয়ও কিছুটা কমে আসবে ফলনও ভালো পাওয়া যাবে। তাছাড়া পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ায় খুব সহজেই উৎপাদিত কৃষি পণ্য ঢাকায় পাঠাতে পারছি বলে আগের তুলনায় দামও বেশি পাচ্ছি।

বড় কোনো সমস্যা তৈরি না হলে এবার আগের তুলনায় বেশি লাভবান হতে পারব বলে আশা করছি। জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, জমির উপযোগিতা অনুযায়ী উন্নত জাতের ও উচ্চ ফলনশীল সবজি আবাদে আমরা মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করে আসছি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারো জেলার সবজি ভাণ্ডারখ্যাত জাজিরা উপজেলার কৃষকরা বর্ষাকালীন সবজি আবাদে ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তুলনামূলক উঁচু জমিতে অধিক লাভের আশায় ১৩৫ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ সম্পন্ন করেছেন।

লক্ষ্যমাত্রার বাকিটা আগস্ট মাসের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলেও আশা করছি। কোনো ব্যত্যয় না ঘটলে আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যেই কৃষক বাজারে সবজি তুলতে পারবেন। এছাড়াও কৃষি বাণিজ্যিকীকরণের এই সময়ে উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে কৃষককে অর্থনৈতিকভাবে বেশি লাভবান করতে আমরা মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করে আসছি।

আমরা কৃষকদের নিরাপদ সবজি উৎপাদনে মালচিং ও বেড পদ্ধতিতে জৈব সার এবং বালাই ব্যবহার করে জমির গুণাগুণ ও প্রকারভেদে বেগুন, শশা, করলা, লাউ, কাঁচামরিচ, ধুন্দলসহ বিভিন্ন শাকসবজি আবাদে উদ্বুদ্ধ করছি। আশা করছি কৃষকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত ফলন পেয়ে অধিক লাভবান হবেন। গত বছর উপজেলায় ৬০০ হেক্টরে বর্ষাকালীন সবজি আবাদ হলেও এবার কৃষকরা অধিক পরিমাণ জমিতে সবজি আবাদ করায় লক্ষ্যমাত্রা ৬৫০ হেক্টরের বেশি জমিতে সবজি আবাদ হবে বলেও আমরা আশাবাদি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত