অবৈধভাবে চলছে মাছ কাঁকড়া ও হরিণ শিকার
সুন্দরবন
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সুযোগ সন্ধানী বেশ কয়েকটি অসাধু চক্র সুন্দরবনের মাছ, কাঁকড়া ও হরিণ শিকারে মেতে উঠেছে। কোনোভাবে অসাধু চক্রগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রয়োজনীয় জনবল সংকটের অভাবে এদের রুখতে বন রক্ষীরা হিমশিম খাচ্ছে। জুন, জুলাই ও আগস্ট তিন মাস সুন্দরবনের সম্পদ আহরণের কোনো বৈধ অনুমতি নেই। কিন্তু শত শত অসাধু জেলে ও চোরা শিকারি চক্রের আনাগোনা চলছে রীতিমতো। জোড়শিং, পাতাখালি, গাতিরঘেরি, হরিহরপুর, আংটিহারা, খাসিটানা, গোলখালি, ঘড়িলাল, চরামুখা, কাটকাটা, পাথরখালি, বতুলবাজার, ৪, ৫ ও ৬নং কয়রা, মঠবাড়ি, তেতুলতলা, খোড়লকাটি, কালীবাড়ি, হড্ডা, গাবুরা, পারশেমারি, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সীগঞ্জসহ বনাঞ্চল এলাকার শত শত জেলে বিষ প্রয়োগ করে প্রতিদিন সুন্দরবন থেকে বিপুল পরিমাণ চিংড়িসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ শিকার করে ফায়দা লুটে নিচ্ছে। ধৃত বিপুল পরিমাণ মাছ ভোর বেলায় দেউলিয়া মাছের আড়ত, চাঁদালি, গিলাবাড়ি, মুন্সীগঞ্জ, হরিনগর মাছের আড়তে বেচাবিক্রি হতে দেখা যায়। অনেকে গহীন বনে টোংঘর তৈরি করে আগুনে চিংড়ি শুকিয়ে মিনি কার্গোযোগে পাচার করছে। সম্প্রতি শিবসা নদী থেকে ৪ লাখ মূল্যের ১৬ বস্তা শুঁটকি চিংড়িসহ দ্জুনকে আটক করে বন বিভাগ ও কোস্ট গার্ড। কয়রায় দেয়াড়া, সাতহালিয়া ও জায়গীরমহল গ্রামে শুঁটকি ব্যবসায়ী জালাল ও হামিদের টোংঘরে চলছে পুরোদমে চিংড়ি শুকানোর কাজ।
জোড়শিং গ্রামের কাঁকড়া সমিতির পৃষ্টপোষক নবাব আলী মোল্লা অর্ধশত কাঁকড়া ডিপো মালিকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ অদায় করে বন রক্ষীদের ম্যানেজ করে সুন্দরবনের নদীখালে কাঁকড়া শিকারের সুযোগ করে দিয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়। কাঁকড়া ডিপো মালিক গোলখালি গ্রামের কুদ্দুছ, রবিউল, লুৎফর মোল্লা, আংটিহারার আছাদুল, শাহিনুর, নন্দ, ঘড়িলালের বিপুল, জোড়শিং পাতাখালির আবু বকর, কিবরিয়া, সুকুমার, কাটকাটার কেনারাম, প্রভাষ, গোপাল, কয়রা সদরের মিলন, দেবদাস, জিয়া, ৬নং কয়রার রবি, হরিদাস, হড্ডার উত্তম, স্বপন, পঞ্চানন, নীলকমল, আশুতোষসহ শতাধিক ডিপো মালিক দেদারসে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে পুরোদমে সুন্দরবনের কাঁকড়া বেচাবিক্রি করে আর্থিক ফায়দা লুটে নিচ্ছে। এদিকে জোড়শিং, পাতাখালি, আংটিহারা, গোলখালি, গাববুনি, ৪নং কয়রা, ৫ ও ৬নং কয়রা, তেতুলতলা, মহেশ্বরীপুর এলাকার ১৫/২০টি চোরা শিকারি চক্র ফাঁদ পেতে প্রতিনিয়ত হরিণ শিকার করছে। বন বিভাগ, কোস্ট গার্ডের অভিযানে মাঝে মধ্যে কিছু হরিণের মাংস উদ্ধার হচ্ছে। কিন্তু চোরা শিকারিচক্রের শক্তিশালী নেটওয়ার্কের কাছে বন রক্ষীরা অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছে।