বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পানগুছি নদীর সন্ন্যাসী-কলারনফেরিঘাট দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে। বারবার আশ্বাস দিয়েও শুরু হয়নি ফেরি চলাচল। ফলে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন নদী পারাপার হচ্ছে এই রুটে চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রী। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার সংলগ্ন পানগুচি নদীতে সন্ন্যাসী-কলারন ফেরি ঘাটটি ২০০৬ সালের ৪ আগস্ট চালু হয়। চালুর এক বছর পর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডরে কলারন প্রান্তের ঘাটটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় ফেরি চলাচল। এরপর প্রায় ১৮ বছর কেটে গেলেও চালু করা হয়নি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ-মোংলা-শরণখোলা -পিরোজপুর রুটের ইন্দুরকানীর কলারন এই ফেরি ঘাটটি। ফলে ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন এই রুটে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণ। দুপাড়ের যাত্রী উঠানামার ঘাটটিও রয়েছে জরাজীর্ণ অবস্থায়। যাত্রীরা কোনোমতে উঠানামা করতে পারলেও মোটরসাইকেল উঠানামার ক্ষেত্রে থাকে প্রচুর ঝুঁকি। দুপাড়ের ঘাটের অবস্থা ভালো না থাকায় অনেক সময় নদীতে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয় যাত্রী সাধারণকে। সন্ন্যাসীর ওপরের যাত্রীদের ট্রলারে করে নদী পাড় হয়ে কলারন ঘাট থেকে বাসে উঠে পিরোজপুর জেলা শহর এবং রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্যের ডিউলেটার এবং অনেক দিন ধরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের চিঠি চালাচালিতেও কোনো কাজ না হওয়ায় ফেরি ঘাটটি অদ্যবধি চালু হচ্ছে না। স্থানীয় সন্ন্যাসীর বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নদীটি পার হতে ট্রলারই আমাদের একমাত্র ভরসা। তা আবার বর্ষা মৌসুমের বৈরী আবহাওয়ায় প্রায়ই বন্ধ থাকে। বর্ষার সময় নদীতে বেশি ঢেউ থাকায় ট্রলারে করে নারী ও শিশুদের নিয়ে নদী পারাপার অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। বারবার আশ্বাসের পরও অজানা কারণে চালু হয়নি ফেরি চলাচল। ফলে, অসুস্থ রোগী ও শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন। আমাদের দাবি হাজারো মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে আবারো কলারন সন্ন্যাসীর ফেরি চালু করা হোক।’ সাংবাদিক অমল তালুকদার, সাংবাদিক ডা. নাসির উদ্দীন জোমাদ্দার বলেন, ‘প্রায়ই এই ঘাট থেকে যাতায়াত করি। সব সময় ট্রলার না থাকার কারণে আমাদের অনেক সময়ই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা আলামিন বলেন, এই ঘাটটি আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ফেরি না থাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নারী শিশুদের নিয়ে পারাপারে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় ১৬নং খাউলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার সাইদুর রহমান বলেন, এ ফেরিঘাটটি পুনরায় চালু হলে মোরেলগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে সন্ন্যাসী ইন্দুরকানীর কলারন, পিরোজপুর, শরনখোলা, সুন্দরবন, মোরেলগঞ্জ ও মোংলার সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা সহজ হবে। এর ফলে ব্যবসা বাণিজ্যেরও একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।’ পিরোজপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর আহমেদ জানান, ‘পানগুছি নদীর সন্ন্যাসী- কলারন ঘাটটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চেষ্টা করছি ফেরি ঘাটটি পুনরায় চালু করার জন্য।