ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চারা সংকটে দুশ্চিন্তায় বর্গাচাষিরা

চারা সংকটে দুশ্চিন্তায় বর্গাচাষিরা

গাইবান্ধা জেলাজুড়ে পুরোদমে শুরু হয়েছে রোপা আমন চারা রোপণের কাজ। তবে গেল বন্যায় বীজতলা নষ্ট হওয়ায় নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা চারা সংকটে পড়ছেন। আর উঁচু এলাকার কৃষকের উদ্বৃত্ত চারাগুলো হাটে তোলা হলেও তার দাম নেয়া হচ্ছে বেশি। প্রতিপোন চারা (২০ গন্ডা) কেনাবেচা হচ্ছে- ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দামে। এতে চারা সংকটে পড়া বর্গাচাষিরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। সম্প্রতি গাইবান্ধার দাড়িয়াপুর, সাদুল্লাপুর, মীরপুর, পাঁচপীর, কামদিয়া, ভরতখালী হাটে গিয়ে দেখা গেছে- আমন ধানের চারা কেনাবেচার দৃশ্য। এ সময় বেশ কিছু দালাল কৃষকদের চারা কেনাবেচা করে দেয়ার নামে পকেটস্থ করছে টাকা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর গাইবান্ধার ৭ উপজেলার মধ্যে ৪ উপজেলা দিয়ে বয়ে গেছে ভয়াবহ বন্যা। এতে কয়েকশ’ হেক্টর বীজতলা নষ্ট হয়। ফলে নিম্নাঞ্চলে চারা সংকটে পড়েছেন কৃষকরা। উঁচু এলাকার হাটগুলোতে ধানের চারা পাওয়া গেলেও তা কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। বিশেষ করে বিপাকে পড়েছেন বার্গাচাষিরা। তারা অন্যের জমি বর্গা (আদি) নিয়েছেন। এর আগে বীজতলা করতে না পারায় তাদের একমাত্র ভরসা হাটের চারা। ফলে অধিক দামে চারা কিনতে হিমসিম খাচ্ছেন তারা। একই সঙ্গে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টোল। দেখা গেছে, কৃষকরা রিকশাভ্যান ও বাইসাকেলযোগে ধানের চারা এনে ওইসব হাটে বিক্রি করেছেন। আর ক্রেতারা মান যাচাই ও জাত নির্ণয়ে চাহিদামতো চারা কিনছেন। রীতিমতো সেখান থেকে চাষিরা চারা কিনে নিয়ে জমিতে রোপণ করছেন। সাদুল্লাপুরের চারা বিক্রেতা জলিল আকন্দ বলেন, আমার জমির বীজতলায় চারা উৎপাদন করা হয়। নিজের জমিতে চারা লাগানো হয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত ৫ পোন চারা ২ হাজার টাকায় হাটে বিক্রি করলাম। এছাড়া প্রতিপোন চারা বিক্রি বাবদ ২০ টাকা হারে ইজারাদারকে দিতে হয়েছে। কামারজানি এলাকায় চারা কিনতে আসা নজরুল ইসলাম বলেন, এ বছরে সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান আবাদের প্রস্তুতি নেয়া হয়। সেই হিসাবে বীজতলা করছিলাম। কিন্তু এরই মধ্যে বন্যায় বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এর ফলে চারা সংকটের কারণে ৬ পোন চারা (২০ গোন্ডা) ২ হাজার ৬০০ টকায় কিনেছি। নিজের জমি না থাকায় প্রতিবেশী এক ব্যক্তির দেড় বিঘা জমি আদি নিয়েছেন বলে জানালেন বর্গাচষি আমজাদ হোসেন। সেই জমিতে রোপণ করতে ২ হাজার টাকা দিয়ে চারা কিনেছেন। এভাবে চড়া দামে চারা-সার কিটনাশক কিনে আবাদ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। সম্প্রতি হাটে প্রচুর পরিমাণ চারা কেনা-বেচা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইজারাদাররা। তারা বলেছেন, পোন প্রতি খাজনা ২০ টাকা করে ক্রেতা- বিক্রেতার কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে। এই হাটে কোনো প্রকার দালাল নেই। গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম জানান, চলতি রোপা আমন মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ৮০ ভাগ। তবে চারার কোনো সংকট নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত