দরিদ্র পরিবারের সন্তান নাজমুল হোসেন (২৫)। তার রিকশাচালক বাবা হামিদুল ইসলাম হাইদুল এক বছর আগে মারা গেছেন। নিহত নাজমুল ইসলামের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে। নাজমুলের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছেন মা গোলেনুর। ছেলে হারানোর শোক আর সংসার চালানোর চিন্তায় যেন আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে তার। কান্না করতে করতে হঠাৎ মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। কোনো ভাবেই থামাছে না এই মায়ের আর্তনাদ। এমনভাবে ছেলের লাশ দেখতে হবে তা কখনো ভাবেননি তিনি। জানা যায়, জীবিকার তাগিদে ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করছিলেন নাজমুল হোসেন।
সারাদেশ যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে উত্তাল, তখন নাজমুল হোসেনও এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এরই মধ্যে গত ৪ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন নাজমুল। সেই গুলি ঢুকে তার পেটের ভেতর। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৯ আগস্ট সন্ধ্যার পর মারা যায় নাজমুল।
এরপর ধার-দেনা করে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। সেখানে গত ১০ আগস্ট সকালে স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। নিহত নাজমুল হোসেনের মা গোলেনুর বেগম কান্নাজড়ি কণ্ঠে বলেন, আমার চার শতক বসতভিটা ছাড়া আর কোনো সহায়-সম্বল নেই। একমাত্র ছেলে ছিল নাজমুল। পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।
এখন আমার সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল। এখন কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করব, সেই চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে। এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. মইনুল হাসান সাদিক বলেন, নিহত নাজমুল হোসেনের পরিবারের খোঁজ-খবর নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সহযোগিতা করেছি। ভবিষ্যতেও পরিবারটির খেয়াল রাখা হবে।