গত ৫ আগস্ট ঢাকাস্থ উত্তরায় বিজয় মিছিলে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ফুলপুরের মাসুম শেখ (৩০)। তিনি উপজেলার বওলা ইউনিয়নের কোকাইল গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র। তার মৃত্যুর একদিন পর লাশের সন্ধান মেলে। পরদিন লাশ বাড়ি আনার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। সন্তান হারিয়ে মা রাহেলা খাতুন আজও শোকে পাথর হয়ে আছেন। তিনি জানান, মাসুম শেখ জন্মের ২৪ দিন পর তার বাবার মৃত্যু হয়েছিল। দরিদ্র সংসারে অনেক কষ্টে লালন পালন করেছি। মাসুম শেখের আড়াই বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। আজ সেও এতিম হয়ে গেছে। সামনের দিনগুলিতে অন্ধকার নেমে এসেছে। কান্নারত অবস্থায় এসব কথা বলার সময় মা বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে মাসুম শেখ ছিলেন সবার ছোট। তিনি গাজীপুর জেলার টঙ্গী উপজেলার অব্দুল গফুর রোডস্থ পদ্মা ডেনিম টেকনোলজি লিমিটেড নামীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন। নিকটস্থ একটি বাসায় স্বপরিবারে ভাড়ায় থাকতেন। নিহত মাসুম শেখের স্ত্রী নাদিরা সুলতানা জানান, সেদিন দুপুরে বাসায় খাওয়ার সময় বন্ধুর ফোনে সরকার পতনের খবর পায়। পরে আনন্দ মিছিলে যোগ দিতে দুপুর আড়াইটায় বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করি। না পেয়ে বিষয়টি ভাসুর হিরা মিয়াকে জানাই। তিনি বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে লাশের সন্ধান পান। বড় ভাই হিরা মিয়া জানান, তাদের আনন্দ মিছিল উত্তরা থানার সামনে গেলে পুলিশ গুলি বর্ষণ করে। এতে তার ভাইয়ের মাথা, ঘাড় ও বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। পরে লোকজন তার লাশ হাসপাতালে নিয়ে গেছে। অনেক খোঁজাখুঁজি করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশের সন্ধান পেয়েছি। অনেক লাশের সাথে আমার ভাইয়ের লাশটি জাতীয় পতাকা দিয়ে ডাকা ছিল। নিহতের চাচা খায়রুল বাশার জানান, আমার পিতা একজন বীর মক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মাসুম শেখ খুবই সুদর্শন ও পরিশ্রমী ছিল। পুলিশের গুলিতে তার মৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত।