ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভা প্রথমশ্রেণির একটি পৌরসভা হলেও এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা অনিয়মিত এবং ৬ মাসের বকেয়া থাকায় বিপাকে পড়েছেন তারা। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত কালীগঞ্জ পৌরসভার স্থায়ী এবং অস্থায়ী মিলে সর্বমোট ১১৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। কালীগঞ্জ পৌরসভায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৬ মাসের বেতন বকেয়া থাকার কথা জানালেও পৌর কর্তৃপক্ষ বলছেন ৩ মাসের বেতন পাওনার কথা।
বেতন ভাতা নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কালীগঞ্জ পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে স্থায়ীভাবে বিভিন্ন পদে চাকরি করছেন ৪৯ জন এবং অস্থায়ীভাবে রয়েছেন ৭০ জন। এর মধ্যে আবার পরিচ্ছন্নকর্মী আছেন ৪৯ জন। পৌরসভার মেয়র এবং কাউন্সিলরদের সম্মানি ভাতাসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ প্রতি মাসে কালীগঞ্জ পৌরসভার খরচ হয় প্রায় ২২ লাখ টাকা। পৌরসভার বেতন অনিয়মিত এবং বকেয়া পড়ে যাওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। দ্রব্যমূল্যের এই বাজারে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন ধারণ করায় এখন বড় চ্যালেঞ্জ এর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের নিকট। যারা তৃণমূলের কাছে সেবা পৌঁছে দেবেম সেসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি হলো পৌরসভা।
স্থানীয় সরকারের এ প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন ভাতা পান না। পৌরসভাগুলোকে তাদের নিজস্ব রাজস্ব তহবিল থেকে বেতন ভাতা প্রদান করতে হয়। পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীদের ভাষ্যমতে, প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হিসেবে কালীগঞ্জ পৌরসভা উল্লেখযোগ্য হারে রাজস্ব আয় করে থাকে। তবুও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা অনিয়মিত এবং বকেয়া থাকায় তারা দুঃখ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালীগঞ্জ পৌরসভার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, আমাদের সর্বমোট ৬ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এরমধ্যে সাবেক দুই পৌর মেয়র এবং বর্তমান মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ এর সময় ধরে মোট ৬ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। আগে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধ করে জনপ্রতিনিধিদের সম্মানী ভাতা দেয়ার কথা থাকলেও মানা হয় না সে নিয়ম। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৬ মাসের বেতন পাওনা থাকলেও জনপ্রতিনিধিদের সম্মানী ভাতা ঠিকই নিয়মিত প্রদান করা হয়। পূর্বে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট এর অর্থ আজও দেয়া হয়নি।
পিএফ এবং গ্রাচুইটির টাকাও বকেয়া রয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন এবং অন্যান্য সুবিধাদির অর্থ সময়মতো না পাওয়ায় তারা মানবেতার জীবনযাপন করছেন বলেও জানান। কালীগঞ্জ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন ও অন্যান্য সব পাওনা পরিশধে বিলম্ব হওয়ার কারণ জানতে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুম এর সাথে কথা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, পৌর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ৩ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে।
বর্তমানে মেয়র মহোদয় অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি অফিসে আসলে তার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।