পাবনা সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্সের নির্দেশেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ছাত্র-জনতার গণঅবস্থান কর্মসূচিতে গুলিবর্ষণ করেছিলেন পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খান ও তার সহযোগিরা। গতকাল রোববার দুপুরে র্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পে জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানান গুলিবর্ষণকারী আবু সাঈদ খানকে গুলি এগিয়ে দেয়া সহযোগী সোহেল খান। এর আগে রোববার ভোরে পাবনার সদরের ভাঁড়ারা ইউনিয়নের নলদাহ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই শিক্ষার্থী হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৭নং আসামি। গতকাল দুপুরে র্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান জানান, জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল খান দুই শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের অংশ নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। এবং ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যান্য সন্ত্রাসীদের সম্পর্কেও চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রদান করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি সোহেল খান জানান, গত ৪ আগস্ট ঘটনার দিন সকাল থেকেই পাবনা শহরের গোডাউন মোড়ে অবস্থান করছিলেন তারা। এ সময় এমপি প্রিন্স ফোন করে সাঈদ চেয়ারম্যানকে। ফোনে কথা বলার পর পরই সাঈদ চেয়ারম্যান সবাইকে সঙ্গে নিয়ে শহরের ট্রাফিক মোড়ের দিকে আসে এবং গাড়ি থেকে নেমেই শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করে। পরে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে তারা শালগাড়িয়া হয়ে পালিয়ে যান। উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে পাবনা শহরের ট্রাফিক মোড়ে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ গণঅবস্থান কর্মসূচি চলছিল। ঐদিন দুপুরের দিকে হঠাৎ করে ভাঁড়ারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খান ও তার সহযোগিরা এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে ঘটনাস্থলেই শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম (১৯) ও মাহাবুব হাসান নিলয় (১৪) নামে দুইজন শিক্ষার্থী নিহত হন। এরপর দ্বিতীয় দফায় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্সসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিবর্ষণে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় গোলাম ফারুক প্রিন্স ও আবু সাঈদ খানসহ ১০৩ জনের নাম উল্লেখ্য করে পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত সোহেল খান এই মামলার এজাহারভুক্ত ৭নং আসামি।