ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন সেতু

বিকল্প বেইলি ব্রিজ না থাকায় পারাপারের ভোগান্তি

অস্থায়ীভাবে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে একটি সাঁকো তৈরি করা হলেও জিকে খালের পানি বাড়লেই ডুবে যায় সাঁকোটি
বিকল্প বেইলি ব্রিজ না থাকায় পারাপারের ভোগান্তি

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপেজলা বাজারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত গঙ্গা কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের প্রধান খালের ওপর দিয়ে অপ্রশস্ত ব্রিজ ভেঙে সেখানে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন সেতু। কিন্তু জনসাধারণের চলাচলের জন্য বিকল্প বেইলি ব্রিজ না থাকায় চরম ভোগান্তি। নির্মাণাধীন সেতুটির বিকল্প চলাচলের জন্য দক্ষিণ পাশে অস্থায়ীভাবে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি সাঁকো। জিকে খালের পানি বাড়লেই প্রায়ই ডুবে যায় এই সাঁকোটি। সাঁকোর ওপর পানি উঠে পড়ায় চলাচলে রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিকল্প বেইলি ব্রিজ নির্মাণের দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে পানি বেড়ে স্রোত বৃদ্ধি পেলে বন্ধ থাকে নির্মাণকাজ। কাজের ধীরগতিতে জনমনে প্রশ্ন জেগেছে, কতদিনে শেষ হবে এই সেতুর নির্মাণ কাজ। আর ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকোই টিকবে কতদিন। জানা গেছে, চলতি বছরের গত ১৩ জুন কুষ্টিয়ার মিরপুর বাজারের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রধান সেচ খালের ওপর নতুন সেতু নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু বিকল্প পারাপারের ব্যবস্থা না রেখেই খালের ওপর থাকা পুরাতন সেতু ভেঙে ফেলা হয়। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই সেতু দিয়ে নিয়মিত পারাপার হওয়া অসংখ্য যানবাহনসহ কয়েক হাজার মানুষ। স্থানীয়রা জানান, ব্রিজের পূর্ব পাশে মিরপুর পৌরসভা এবং পশ্চিম পাশে মিরপুর থানা ও মিরপুর উপজেলা প্রশাসনের সব অফিস, ব্যাংক রয়েছে। এ ছাড়াও মিরপুরের এলাকাটিতে অনেক স্কুল ও কলেজ অবস্থিত। মিরপুর উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ভেড়ামারা ও দৌলতপুরের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন এই ব্রিজ পার হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে যেতেন। এ ছাড়াও প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ব্রিজটি ব্যবহার করে মিরপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মাহমুদা চৌধুরী কলেজ ও মিরপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়সহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করে। মিরপুর উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ভেড়ামারা ও দৌলতপুরের রোগী বহনকারী অনেক অ্যাম্বুলেন্স সেতুটি দিয়েই পারাপার হতো। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই সেতু ভাঙার আগে কাছাকাছি কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে তড়িঘড়ি করে সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়। বাঁশ দিয়ে পায়ে হেঁটে পারাপারের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বাঁশের সাকো নির্মাণ করা হলেও অনেক সময় সেটি পানিতে তলিয়ে থাকে। সাঁকোটি নড়বড়ে হওয়ার কারণে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়। যানবাহন পারাপারের বিকল্প কোনো রাস্তা নির্মাণ না করায় মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। অথচ প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ মিরপুর উপজেলাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে যাওয়া-আসা করেন। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার ঘুরে পার্শ্ববর্তী পালপাড়া ব্রিজ ঘুরে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অফিস, থানায় আসতে হয়। কিন্তু পালপাড়া সেতুতে প্রায়ই যানজট লেগেই থাকে। ফলে মানুষের দুর্ভোগের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে কুরিপোল ব্রিজ দিয়ে উপজেলা শহরে ঢুকতে হলে আরো চার কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হয়। এতে ব্যয় হয় অতিরিক্ত অর্থ ও সময়। স্থানীয় ধুবইল গ্রামের সেলিম রেজা বলেন, এই সেতু দিয়ে আমার পাঁচ বছরের নাতিকে প্রতিদিন স্কুলে দিয়ে আসতে হয়। কিন্তু সেতুটি ভেঙে ফেলায় অনেক সমস্যা হচ্ছে। মিরপুর বাজারের ব্যবসায়ী মুসা শেখ জানান, উপজেলার সব গুরুত্বপূর্ণ অফিস ব্রিজের অন্য প্রান্তে। ব্রিজ ভাঙা হয়েছে অথচ বিকল্প কোনো পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়নি। বিকল্প রাস্তা হিসেবে স্থানীয় পালপাড়া দিয়ে মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু ওই পালপাড়ার ব্রিজ প্রশস্ত কম হাওয়ার কারণে অনেক সময় যানজট লেগেই থাকে। গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্রিজের অন্য পাশে যেতে হলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। দ্রুত পারাপারের জন্য ভালো কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না করা গেলে মানুষের কষ্ট আরো বাড়বে বলে আমি মনে করি। তা ছাড়াও মুমূর্ষু রোগীদের নেয়ার ক্ষেত্রে অনেক রাস্তা ঘুরে হাসপাতালে যেতে হয়। এতে অনেককে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। অতিদ্রুত ব্রিজটির নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত