পরিবারকে সতর্ক করে নিজেই গুলিতে নিহত
এখনো লাশও পায়নি পরিবার
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ফুলপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ঢাকায় পুলিশের গুলিবর্ষণের খবর জানিয়ে পরিবারকে সতর্ক করে গত ১৮ জুলাই নিজেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ফুলপুরের মাহিন মিয়া (২৮) নামে এক যুবক। সে উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের দ্বারাকপুর গ্রামের গাজী মিয়ার পুত্র। তার লাশও না পেয়ে পাগল প্রায় পরিবার। নিহতের পিতা গাজী মিয়া জানান, প্রায় ২৪ বছর ধরে স্বপরিবারে ঢাকাস্থ মোহম্মদপুর এলাকায় বসবাস করছেন। তিনি বাসায় দারোয়ান ও স্ত্রী জোসনা বেগম বাসাবাড়িতে কাজ করেন। একমাত্র ছেলে মাহিন মিয়া পিকআপ গাড়ি চালান। তিনি মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোড ও বিয়ের পর ছেলে মাহিন মিয়া মোহাম্মদপুর তিন রাস্তা মোড় এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। গত ১৮ জুলাই মাহিন মিয়ার স্ত্রী আমার বাসায় বেড়াতে আসে। রাত সাড়ে ৭টার দিকে ছেলের বাসার কাছে পুলিশের গুলিবর্ষণ ও আওয়ামী লীগের লোকজনের হামলা শুরু হয়। মাহিন মিয়া মোবাইল ফোনে বিষয়টি আমাকে জানিয়ে সতর্ক করে স্ত্রীকে বাসায় পাঠাতে নিষেধ করে। এ সময় আমিও ছেলেকে সতর্ক থাকতে বলছিলাম। এরইমাঝে মাহিন মিয়ার কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। এই ছিল তার সাথে শেষ কথা। পরে বারবার ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করে নাই। এরপর থেকে থানা হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করছিলাম। ১০ দিন পর ঢাকাস্থ আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামে গিয়ে ছবি দেখে পুত্রের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। তাকে শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে কবর দেয়া হয়েছে বলেও শুনেছি। নিহতের মা জোসনা আরা জানান, মাহিন মিয়ার বিয়ের ১১ বছর পরও সন্তান না হওয়ায় দ্বিতীয় বিয়ে করানো হয়। ৮ মাস আগে দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে সন্তান হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে প্রথম স্ত্রীরও সন্তান হবে। আমি ছেলে হারালাম। আর তার সন্তান এতিম হয়ে গেল। এখনও তার মৃত্যুর কোনো কাগজপত্র পাচ্ছি না। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। নিহতের নানি ছফুরা খাতুন জানান, আমরা মাহিনের লাশটাও পেলাম না। আল্লাহর কাছে হত্যাকারীর বিচার চাই।