সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ১২৬ জনের নামে মামলা দায়ের
প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে নির্দেশদাতা হিসেবে এবং কুষ্টিয়ার সাবেক তিন সংসদ সদস্য, কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ, কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মাহফুজুল হক, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিসহ মোট ১২৬ জনের নাম উল্লেখ করে কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মাথায় গুলি করে বাবলু ফারাজী (৫৮) নামে এক হকারকে হত্যার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। গত সোমবার বিকালে নিহত বাবুলের ছেলে সুজন মাহমুদ বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানার আদালতে মামলাটি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের পেশাদার মতিয়ার রহমান। মতিয়ার রহমান বলেন, নিহতের ছেলে সুজন মামলা করেছেন। বিচারক অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন। পিবিআই অভিযোগের অনুসন্ধান করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিকাল ৩টার দিকে শহরের থানার মোড় এলাকায় বাবুলকে গুলি করে ও এলোপাতাড়ি মারপিট করে হত্যা করা হয়। সে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ফেরি করে গামছা, বিছানার চাদর ও লুঙ্গি বিক্রি করতেন। বাবুল কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর গ্রামের মৃত নওশের আলীর ছেলে। এ ঘটনায় গত সোমবার বিকালে করা হত্যা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে এমপির কামারুল আরেফিন, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ, সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, কুষ্টিয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ, কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মাহফুজুল হক, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, জাহিদ হোসেন জাফর, শামছুজ্জামান অরুন, বাবুল আক্তার, মিনহাজুল আবেদীন দ্বীপ, কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শ্রী দিপেন্দ্র নাথ সিংহ, এসআই আসাদুজ্জামান আসাদ, সাহেব আলী, মোস্তাফিজুর রহমান, এএসআই উজ্জল হোসেন, জেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক স্বপন, অজয় কুমার সুরেখা, বিশ্বনাথ সাহা বিশু, রমেশ ঠাকুর, মতিউর রহমান মজনু, আনিছুর রহমান আনিছ, পারভেজ আনোয়ার তনু, আলী জিন্নাহ, কামাল ঠাকুর, অমূল্য, আরশাদ আলীসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিসহ মোট ১২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। নিহতের ছেলে সুজন এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তার বাবা বাবলু রাস্তাঘাট, হাটে-বাজারে ঘুরে গামছা, লুঙ্গি, বিছানার চাদর ইত্যাদি বিক্রয় করিয়া জীবিকা নির্বাহ করতেন। আসামিদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এক নম্বর আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশনায় ২ থেকে ১২ নম্বর আসামিদের হুকুমে অন্যান্য আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা, হাসুয়া, চাইনিজ কুড়াল, বেঁকি, হাতুড়ি, লোহার রড, বাঁশের লাঠি, কাঠের বাটাম, ইট-পাটকেলসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে আক্রমণ করতে থাকে। হকার বাবলু ব্যবসার কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে বিকাল ৩টা ২০ মিনিটের দিকে থানা মোড়ের পশ্চিম পার্শ্বে পদ্মা প্রিন্টার্সের সামনের গলিতে অসহযোগ আন্দোলনকারী ও আসামিদের সংঘর্ষে মধ্যে পড়ে। ১২ থেকে ১৮ নম্বর আসামিরা তাদের কাছে থাকা বিভিন্ন প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে।