ঢাকা ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে প্রত্যয়ন

কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

কাউখালীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালকরে প্রতারণাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে জয়কুল কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। তার বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় অনুসন্ধান করলে জানা যায় যে, বর্তমান নাম এম মতিউর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজ ২০০০ সালের যার পূর্ব নাম ছিল জয়কুল আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ২০১৭ সালে জাল জালিয়াতি করে কাগজপত্র জমা দিয়ে নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের চোখে ধুলো দিয়ে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ লাভ করেন। পরবর্তী সময় বেতন ভাতা করার জন্য কাগজপত্র জমা দিলে তার জাল জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। যার ফলে দীর্ঘ ৭ বছরেও এমপিওভুক্ত হতে পারেননি তিনি। বেতন ভাতা না হওয়ায় তিনি শুরু করেন অনিয়ম ও দুর্নীতি। অনুসন্ধানের সময় ওই প্রতিষ্ঠানের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম হোসেন জানান, যে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করার পর থেকে ওই স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিভিন্নভাবে তিনি অনিয়ম দুর্নীতির শুরু করেন। তার বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় প্রতিবাদ করলে তিনি সুকৌশলে নতুন কমিটি না করে বেআইনিভাবে কয়েক দফায় এডহক কমিটি গঠন করে তার খেয়াল খুশি মতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন এবং শিক্ষক কর্মচারীদের জিম্মি করে নানা অজুহাতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। সরকারি বিধিবিধানের তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন সভায় ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন, পরীক্ষার ফরম ফিলাপ, প্রবেশপত্র, প্রশংসাপত্রসহ ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন কাজে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে নিজে আত্মসাৎ করেন। প্রতিষ্ঠানের নামে জমাকৃত লাখ লাখ টাকা নিজ খেয়াল খুশি মতো ভুয়া বিল ভাউচার এর মাধ্যমে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন বলেও জানান সাবেক সভাপতি সেলিম হোসেন।

এছাড়াও গত ২৬-৬-২০২৪ তারিখে আর্থিক বরাদ্দ পাওয়ার জন্য কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লার স্বাক্ষর জাল করে প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলে তা ধরা পড়লে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ১৮ আগস্ট তাকে শোকাজ করেন। তার দুর্নীতি অনিয়ম এর ব্যাপারে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন তালুকদার জানান, অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে মাসের পর মাস স্কুলে উপস্থিত না হয়েও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর প্রদান করেন তিনি। শিক্ষকদের বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বেতন ভাতা বন্ধ করে দেন। দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা নিয়ে আবার তাদের বিলের টাকা ছেড়ে দেন। তার এ সব অভিযোগের বিষয় স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষকরা সম্মিলিতভাবে দুর্নীতি দমন কমিশন, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করলেও আজ পর্যন্ত অভিযোগের তদন্ত আলোর মুখ দেখেনি। কারণ হিসেবে অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন কোনো অভিযোগের তদন্ত আসলেই তাদের সাথে সে অর্থের বিনিময়ে আঁতাত করে তদন্ত আঁতুড় ঘরে পাঠিয়ে দেন। স্কুলের পুরোনো গৃহ, গাছপালা অবৈধভাবে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করেন অধ্যক্ষ এমন অভিযোগে করেন স্থানীয়রা। অধ্যক্ষের এই সমস্ত অনিয়মের বিষয় কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সে এখন বেপরোয়া। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ মো: জসিম উদ্দিন বলেন তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ সঠিক নয়, পুরোটাই ভিত্তিহীন। স্বার্থন্বেষী মহল তাকে হয়রানি করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে বিভিন্ন সময় অভিযোগ দিয়ে থাকেন। স্বাক্ষর জাল করা হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লা বলেন, তার স্বাক্ষর জাল করার একটি প্রমাণ পেয়েছেন। কারণ দর্শানোর জন্য অধ্যক্ষকে শোকাজ করা হয়েছে। এসব এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরো কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত