অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ফরম পূরণে বাড়তি টাকা আদায়

মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি

বগুড়ার শেরপুরে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ফরম পূরণে বাড়তি টাকা আদায়ের প্রতিবাদে উত্তরবঙ্গ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার দুপুরে শহরের টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরি মহিলা অনার্স কলেজের শিক্ষার্থীরা উপজেলা পরিষদের সামনে ওই মহাসড়কে ঘুণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় মহাসড়কের দুইপাশে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন দূরপাল্লার সাধারণ যাত্রীরা। একপর্যায়ে দাবি মেনে নিতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে আগামী ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে আজকের মতো কর্মসূচি সমাপ্ত করেন শিক্ষার্থীরা। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে আসে। তবে দাবি মানা না হলে আবারো কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে চলছে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ফরম পূরণ কার্যক্রম। কিন্তু এই ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বাড়তি টাকা নেয়া হচ্ছে। শিক্ষাবার্ডের নিয়মণ্ডনীতি উপেক্ষা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ ২ হাজার ৫০০ টাকার পরিবর্তে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন। এরমধ্যে বেতন ছয় হাজার টাকা, বোর্ড ফি ২ হাজার ৫০০ টাকা, উন্নয়ন ফি ১ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ ও পৌর কর ২০০ টাকা, বিবিধ ৫০০ টাকাসহ মোট ১০ হাজার ২০০ টাকা রশিদে লেখা থাকলেও বাকি টাকার কোনো রশিদ দেয়া হয় না। তবে অতিরিক্ত টাকা ভর্তির সময় বকেয়া থাকায় সেটি যোগ করে কারো ১৫ আবার কারো ১৭ হাজার করে টাকা নেয়া হচ্ছে বলে কলেজের পক্ষ থেকে আদায়ের দায়িত্বে থাকা একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারী স্বীকার করেন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক নারী শিক্ষার্থী উপজেলা পরিষদের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। ‘বন্ধ হলে দুর্নীতি, কলেজের হবে উন্নতি’ এমন নানা স্লোগান দিচ্ছেন তারা। এ সময় কথা হয় নাসরিক আক্তার, সুমাইয়া খাতুন, নাজনীন আক্তারসহ একাধিক আন্দোলকারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তারা অভিযোগ করে বলেন, ফরম পূরণে বাড়তি টাকা নেয়ার বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু শিক্ষকরা তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন। এমনকি বাড়তি টাকা না দিলে ফরম পূরণ করা সম্ভব নয়, তাই পরীক্ষা দিতে দেয়া হবে না। প্রয়োজনে কলেজ থেকে বের করে দেয়ারও হুমকি দেন তারা। ফলে বাধ্য হয়েই আন্দোলন করছি। নিয়মবহির্র্ভূতভাবে বাড়তি টাকা আদায় বন্ধ করা না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। তাদের ওই কর্মসূচিতে বেশকিছু অভিভাবকদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে।

বিষয়টি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চাইলে শেরপুর টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরি মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। তাই এখনো অনেক কিছুই অজানা। আগের অধ্যক্ষ এসব ফি নির্ধারণ করেছিলেন। তাই এই বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। তবে শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্ট দাবিগুলো লিখিতভাবে দিতে বলা হয়েছে। তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই বিদ্যমান সমস্যা সমাধান করা হবে বলে মন্তব্য করেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুমন জিহাদী এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো অবশ্যই মেনে নেয়া হবে। এজন্য কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। আশা করি, ওই বৈঠকেই এই বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে বলে দাবি করেন তিনি।