কক্সবাজারে পানিবন্দি ৫০ গ্রামের মানুষ
প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজারের পানিতে ডুবে ও স্রোতে ভেসে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে আরও ২ জন। একই সঙ্গে বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে জেলার অন্তত ৩০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ তোফায়েল হোসেন জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত কক্সবাজারে ২৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টি আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রামু উপজেলার ঈদগড়ে পানিতে ডুবে রাখাইন এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে এবং গর্জনিয়ায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের স্রোতে দুই যুবক ভেসে গেছেন বলে জানিয়েছেন রামু থানার ওসি মো. আবু তাহের দেওয়ান। তিনি নিহত যুবকের বাড়ি উপজেলার ঈদগড়ে নিশ্চিত করলে ও তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম জানাতে পারেননি। নিখোঁজরা হলেন- উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের পূর্বজুমছড়ি গ্রামের ছৈয়দ হোসেনের ছেলে আমজাদ হোসেন (২২) এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের ছালেহ আহমদের ছেলে রবিউল আলম (৩৫)। গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল জব্বার বলেন, ‘আমার পার্শ্ববর্তী ২ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বজুমছড়ি কবরস্থান সড়ক পার হতে গিয়ে আমজাদ হোসেন পানির স্রোতে ভেসে গেছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়ন থেকেও বাঁকখালী নদীর পানির স্রোতে রবিউল আলম নামের একজন ভেসে যাওয়ার খবর পেয়েছি। আমার ওয়ার্ডের ২৫০ পরিবার পানিবন্দি। সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। কারো চুলায় আগুন জ্বলছে না। আমি যথাসম্ভব খিচুড়ি রান্না করে জনে জনে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি। উপজেলার গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, কাউয়ারখোপ ও জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বাঁকখালী নদীর ভাঙনে এসব এলাকার বাসিন্দারা হুমকির মুখে পড়েছে।ওসি আবু তাহের দেওয়ান বলেন, আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করায় রামুর বিভিন্ন জায়গায় পানি বেড়ে গেছে। সবার সঙ্গে সমন্বয় করে দুর্ভোগ নিরসনে কাজ করা হচ্ছে। রামুর অনন্ত ৩০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। বৃষ্টিতে কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের পানিতে প্লাবিত হয়েছে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। একই সঙ্গে উখিয়া ও টেকনাফের ১০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে পেকুয়া উপজেলার আরো ১০টি গ্রামের মানুস পানিবন্দি হয়েছে।
যেখানে কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটলেও এ পর্যন্ত প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কক্সবাজারের প্রধান নদী বাঁকখালী ও মাতামুহুরির পানি বিপদ সীমার অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ঈদগাঁও ও রামু উপজেলায় বন্যা দূর্গত এলাকা পাল পাড়া, বাঁশঘাটা, ঈদগাঁও বাজার ও রামু জোযারিয়ানালা ইউনিয়নের ইলিশিয়া পাড়া নদীর ভাঙন পরিদর্শনসহ দূর্গত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিরণ করেছেন, সদর রামু ও ঈদগাঁও আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবি বিষয়ক সম্পাদক জননেতা আলহাজ্ব লুৎফুর রহমান কাজল। এ সময় তিনি পানিবন্দি মানুষের পাশে দাড়াতে দলীয় নেতাকর্মীসহ সামর্থ্যবান সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।