লক্ষ্মীপুরে বন্যায় ভেসে গেছে অর্ধ লক্ষাধিক পুকুরের মাছ, এতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। লক্ষ্মীপুরে গত এক সপ্তাহের টানা বর্ষণে প্রায় ৫০ হাজার পুকুর ডুবে চাষ করা সব মাছ ভেসে গেছে। এতে জেলায় মৎস্য খাতে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। পুরো জেলায় টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় জলাবদ্ধতা বেড়েই চলেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে বলে ধারণা করছে মৎস্য বিভাগ। গত শুক্রবার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জেলায় চাষাবাদকৃত প্রায় ৫৪ হাজার পুকুর রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজার পুকুর ডুবে প্রায় সব মাছই ভেসে গেছে। ৫ হাজার ৩০০ হেক্টর মাছ চাষের জলাশয় পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে মৎস্য চাষিদের প্রায় ১০০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। সরেজমিনে কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা, চরমার্টিন, চরকালকিনি, লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের সমসেরাবাদ, লামচরী, লাহারকান্দি, শাকচর, টুমচর, দালাল বাজার ও ভবানীগঞ্জ রামগঞ্জের কাঞ্চনপুর, ইছাপুর, চন্ডিপুর, লামচর, করপাড়া, ভোলাকোট, ভাটার, ভাদুর এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় গত ১ সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টি লক্ষ্মীপুরেজলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে মৎস্য চাষিদের পুকুরগুলোও ডুবে গেছে। পরে চাষের মাছগুলো পুকুর থেকে ভেসে গিয়ে খাল-বিলে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই বিভিন্নভাবে সেই মাছ শিকার করেছেন। জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের কামাল হোসেন, টুমচরের মহিম উদ্দিন, চরকালকিনির আরিফ রামগঞ্জের ভোলাকোট গ্রামের মানিক হোসেন লক্ষ্মীধর পাড়া গ্রামের আরিফ হোসেন, হাঁপানিয়া গ্রামের কামাল হোসেনসহ কয়েকজন মৎস্যচাষি জানায়, লাখ লাখ টাকা খরচ করে আমরা মাছ চাষ করেছি কিন্তু টানা বর্ষণে ঘের-জলাশয় ভেসে গিয়ে একেক জনের ৭০-৮০ লাখ টাকার মাছ চলে গেছে। সদর উপজেলার চর রমনী মোহন ইউনিয়নের মেঘনা নদী এলাকার মৎস্যচাষি জাকির হোসেন বলেন, পাঁচটি পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১৫ লাখ টাকার মাছ ছিল। পানি ঢুকে সব মাছ বের হয়ে গেছে। সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সারোয়ার জামান বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছি। যদি কোনো সহযোগিতা আসে ইনশাআল্লাহ সমহারে বণ্টন করা হবে। সরজমিনে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে বন্যায় ভেসে যাওয়া ছোট ছোট মাছের পোনা গ্রামের লোকজন বিভিন্ন ভাবে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে অদূর ভবিষ্যতে দেশ মাছ শূন্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই অনতিবিলম্বে এ সব পোনামাছ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রশাসনের এখনি এগিয়ে আসা দরকার।