যশোরের কেশবপুর প্রেসক্লাবে হামলা- ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গত ১৬ আগস্ট কেশবপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জয়দেব চক্রবর্ত্তী বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর থেকে দুর্বৃত্তরা প্রেসক্লাব দখল করে নিবে বলে সাংবাদিকদের একের পর এক হুমকি দিয়ে চলছে। কিন্তু ১০ দিন পার হলেও মামলা রেকর্ড হওয়ার কারণে সাংবাদিকদের ভেতর ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সে কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, তথ্য উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বিকালে কেশবপুর প্রেসক্লাবে একদল দুর্বৃত্তরা তিন দফা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। দুর্বৃত্তরা কেশবপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তন, গ্রন্থাগার, সভাপতি-সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের দুটি কক্ষ, সিসি টিভি, ডিজিটাল সাইনবোর্ড, বৈদ্যুতিক মিটার, বিভিন্ন কক্ষের জানালার থাই গ্লাস, অসংখ্য চেয়ার ও বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর এবং গ্রন্থাগার থেকে অনেক বই লুট করে। এ সময় সাংবাদিকদের তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পরে দুর্বৃত্তরা যশোর-চুকনগর সড়কের উপর প্রেসক্লাবের শতাধিক চেয়ার, বিভিন্ন মালামাল ও সাংবাদিকের একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে প্রেসক্লাবের প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রেসক্লাব পরিদর্শন করেছেন কেন্দ্রীয় ও উপজেলা বিএনপি, জামায়াতের নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট আইনজীবীরা ও থানা পুলিশ। এর ভেতর কেশবপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিস প্রেসক্লাবের বৈদ্যুতিক সংযোগ পুনরায় চালু করে দেয়ার পর দুর্বৃত্ত কতৃক গুঁড়িয়ে দেয়া বিভিন্ন মালামাল সরিয়ে সাংবাদিকদের কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটিসহ সাধারণ সদস্যদের নিয়ে মিটিং করা হয়েছে। মিটিংয়ে এটি একটি নিন্দনীয় ঘটনা বলে সদস্যরা প্রস্তাব করেন এবং সকল সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে এ ঘটনায় থানায় মামলা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ঘটনায় জড়িত দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান সাংবাদিক নেতৃবৃন্দরা। এ ঘটনায় কেশবপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন কেশবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফ-উজ-জামান খান (দৈনিক ইত্তেফাক), সহ-সভাপতি আবদুল হাই সিদ্দিকী (দৈনিক নয়াদিগন্ত), সাধারণ সম্পাদক জয়দেব চক্রবর্ত্তী (দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ), যুগ্ম সম্পাদক উৎপল দে (বাংলাদেশ সময়), কোষাধ্যক্ষ শামসুর রহমান (দৈনিক সংবাদ), দপ্তর সম্পাদক মশিয়ার রহমান (দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ) সহ সকল সদস্যবৃন্দ। এ ব্যাপারে কেশবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফ-উজ-জামান খান ও সাধারণ সম্পাদক জয়দেব চক্রবর্ত্তী বলেন, এবারই প্রথম দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে প্রেসক্লাবে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট করাসহ মালামাল পুড়িয়ে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জয়দেব চক্রবর্ত্তী গত ১৬ আগস্ট বাদী অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জন দুর্বৃত্তরা ঘটিয়েছে উল্লেখ করে কেশবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু ১০ দিন পার হলেও মামলা রেকর্ড না হওয়ায় সাংবাদিকদের ভেতর ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। দুর্বৃত্তরা প্রেসক্লাব দখল করে নিবে বলে সাংবাদিকদের একের পর এক হুমকি দেওয়ার ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, তথ্য উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: জহিরুল আলম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।