বরগুনার বামনা উপজেলা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনায়েত কবির হাওলাদারের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখল, হামলা ও হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে বরগুনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তারই আপন ছোট ভাই একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো: হুমায়ূন কবির হাওলাদার। লিখিত অভিযোগে হুমায়ূন কবির বলেন, এনায়েত কবিরের সাথে আমার দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদের নেতৃত্বকে কেন্দ্র করেও রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে। ২০২২ সালে আমি অসুস্থতার কারণে ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আমার বিরুদ্ধে দুইমাসে পরপর ৬টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। আমি ৩টি মামলায় নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি। বাকি ৩টি জমি সংক্রান্ত মামলা এখনো আদালতে চলমান আছে। কিন্তু গত ৫ আগস্ট দেশের সরকার পরিবর্তনের পর এনায়েত কবির হাওলাদার ও তার ছেলেরা খুবই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
আমার একমাত্র ছেলে করোনা আক্রান্ত হয়ে ২০২১ সালে মারা গেছে। দুটি মেয়ে বিবাহিত। আমি বাড়িতে বিধবা পুত্রবধু, নাতি এবং অসুস্থ্য স্ত্রীকে নিয়ে থাকি। আমাকে অসহায় পেয়ে আমার ভোগদখলীয় সম্পত্তি অন্যায়ভাবে জবরদখলের চেষ্টা করছে এনায়েত কবির হাওলাদার। গত ২৪ আগস্ট সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ২৫/৩০ জনের বহিরাগত সন্ত্রাসী এবং দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁঠা নিয়ে আমার ভোগদখলীয় বাগান বাড়ির সীমানা ভেঙে দখলের চেষ্টা চালায়। এ সময় আমি এবং আমার পরিবার বাঁধা দিলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং নানাভাবে হুমকি দেয়। ওই সময় তিনি (এনায়েত কবির) বলেন এখন বিএনপি ক্ষমতায়, আমরা যা করবো সেটাই হবে। যার ভিডিও রেকর্ড আমাদের হাতে আছে। এক পর্যায়ে আমাদের বাঁধা উপেক্ষা করে জমি দখল করতে চাইলে, আমরা অনুপায় হয়ে ৯৯৯-এ ফোন দেই। পরে বামনা থানা পুলিশ এসে তাদের সরিয়ে দেয়। এরপর তারা আমাকে এবং আমার পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছে। যেকোনোভাবে আমার সম্পত্তি দখল করবে এবং আমার জীবন বিপন্ন করে দিবেন যে কারনে আমি এই বৃদ্ধ বয়সে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে বসবাস করছি। এমনকি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইটভাটার পার্টনার মো: সাইফুল্লাহ সিদ্দীকিকে জীবননাশের হুমকি দিয়ে আসছে। যার অডিও রেকর্ড আমাদের কাছে আছে। তিনি আরো বলেন, এনায়েত কবির হওলাদার একজন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। ১৯৯১ সালে প্রথম সন্ত্রাস দমন আইন হওয়ার পর, দেশের দ্বিতীয় সন্ত্রাসী মামলার এক নম্বর আসামি ছিলেন এবং বরগুনার আদালতে ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়। তিনি কোন সালিশী ব্যবস্থা না মেনে গায়ের জোরে সবকিছু করতে যাচ্ছে। তাই এ ব্যাপারে তিনি ও তার পরিবার প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দাবি করেছেন। এ বিষয়ে এনায়েত কবির হাওলাদার বলেন, আমার জমিতে আমি দখলে আছি, কিন্তু সে (হুমায়ূন কবির হাওলাদার) ভোগদখলে আমাকে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। তার দাবি, তাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই সংবাদ সম্মেলনে এসব মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।