গত কয়েকদিনে লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বন্যাকবলিত এসব এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কেন্দ্র থেকে ১৫৫ মেট্রিক টান চাল ও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। ফেনী ও নোয়াখালী জেলার বন্যার পানি রহমতখালী খাল হয়ে লক্ষ্মীপুরের লোকালয়ে ঢুকে ক্রমশ পানি বাড়ছে। জেলার ৯০ শতাংশ এলাকা এখন পানির নিচে।
জলাবদ্ধতায় পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ। ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় হাঁস, মুরগি ও গবাদিপশুসহ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটেছে। সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, যুব রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা পানিবন্দি বাসিন্দাদের উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। জেলায় ৫০ হাজার মানুষ এখন বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছে। স্থানীয়রা জানায়, ফেনী ও নোয়াখালী জেলা থেকে বন্যার পানি লক্ষ্মীপুরে প্রবাহিত হচ্ছে। রহমতখালী, ওয়াপদা ও ভুলুয়া খাল দিয়ে হু হু করে পানি লক্ষ্মীপুরের লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। রহমতখালী খাল, রামগতি, কমলনগরের ভুলুয়া নদী, রামগঞ্জের ওয়াপদা, বিরেন্দ্র খাল, রায়পুরের ডাকাতিয়া নদীসহ বিভিন্ন স্থানে নদী-খাল দখল করে বাধদিয়ে মাছ চাষ, সেতু, কালভার্ট, রাস্তা, দোকানপাটসহ স্থাপনা নির্মাণ করায় বন্যার পানি মেঘনা নদীতে নামতে বেগ পেতে হচ্ছে, ফলে ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সাপে কামড়ে ৭১ জন আক্রান্ত হয়েছে। সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার অরুপ পাল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমাদের সদর হাসপাতালে গত কয়েকদিনে ৬৩ জন সাপে কামাড়ানো রোগী এসেছেন। এরমধ্যে গত দুই দিনে ১০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইজন চিকিৎসা নিয়েছেন। এরমধ্যে কয়েকজন রোগীকে বিষাক্ত সাপে কামড় দিয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউনুস মিয়া জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মোতাবেক সদর উপজেলায় ৩০ মেট্রিক টন, রায়পুরে ২৫ মেট্রিক টন, রামগঞ্জে ৫০ মেট্রিক টন, রামগতিতে ২০ মেট্রিক টন ও কমলনগরে ৩০ মেট্রিক টনসহ ১৫৫ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ নগদ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, ডাকাতিয়া ও রহমতখালী নদীসহ বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দেয়ায় জলাবদ্ধতা ও বন্যা দেখা দেয়। গত দুই দিনে দুই শতাধিক বাঁধ কেটে দেয়া হয়েছে। ফলে পানি নামতে শুরু করেছে।