লাইসেন্স ছাড়াই বছরের পর বছর চলছে ডায়াবেটিক সমিতি

প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শরীফ উদ্দীন, চুয়াডাঙ্গা

ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাইসেন্স ছাড়াই বছরের পর বছর চলছে চুয়াডাঙ্গা ডায়াবেটিক সমিতির কার্যক্রম। নানা অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ডায়াবেটিক সমিতি পরিদর্শনে গেলে সেখানে নানা অনিয়ম পাওয়া যায়।

ডায়াবেটিক সমিতির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার জন্য জব্দ করে নিয়ে যান চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা.সাজ্জাৎ হাসান। আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের আপন ছোট ভাই রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন চুয়াডাঙ্গা ডায়াবেটিক সমিতির সাভাপতি। সরকার পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান শহরের সদর হাসপাতাল রোডে অবস্থিত ডায়াবেটিক সমিতি সরেজমিন পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনের সময় তিনি দেখেন, চুয়াডাঙ্গা ডায়াবেটিক সমিতির নামে কোনো লাইসেন্স নেই। কেবল ২০২২-২৩ অর্থ বছরে অনলাইনে নামমাত্র আবেদন করা আছে। যেখানে সংযুক্তি ফাইলে চালানের কপি ছাড়া আর কোনো কাগজপত্র আপলোড করা হয়নি। লাইসেন্সের জন্য যে সব কাগজপত্র থাকা জরুরি সে গুলো হল, মালিকের জাতীয় পরিচয়পত্র, হাল নাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিবেশের ছাড়পত্র, প্রতিষ্ঠানের নামে/মালিকের নামে আয়কর প্রত্যয়নপত্র, বিন সার্টিফিকেট, পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত পরিবেশ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ফিসের চালান কপি এবং ভ্যাট রশিদ।

পরিদর্শনে আরো দেখা যায় যে, ইসিজি এবং আল্ট্রাসনো কক্ষ অত্যন্ত নিম্নমানের। এগুলো অপরিস্কার ও অপরিছন্ন। এগুলো স্টোর রুমের মত প্রতিয়মান হয়েছে। কর্তব্যরত ডাক্তারদের নামে কোনো নিয়োগ নেই। ডক্টরস চেম্বার গুলো ছোট ও অস্বাস্ব্যকর পরিবেশ। গত ২২ আগস্ট দুপুরে সিভিল সার্জন চুয়াডাঙ্গা ডায়াবেটিক সমিতি পরিদর্শন করে তার পরিদর্শন প্রতিবেদনের বিষয়টি গত বৃহস্পতিবার জানাজানি হয়। এ সময় সিভিল সার্জনকে সহযোগীতা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান ।

দীর্ঘ দিন ধরে চুয়াডাঙ্গা ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের ছোট ভাই রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ডায়াবেটিক সমিতির দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে ক্ষমতার পট পরিবর্তন হওয়ায় তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। সহ-সভাপতি হিসাবে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সী আলমগীর হান্নান, সহ-সভাপতি আজাদ মালিতা, সাধারণ সম্পাদক হিসাবে মুহা. শামশুজ্জোহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শাহান, কোষাধ্যক্ষ আলাউদ্দীন হেলা, কার্য নির্বাহী সদস্য হিসাবে রয়েছেন এ্যাডভোকেট. সেলিম উদ্দিন খান, এ্যাডভোকেট ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, এ্যাডভোকেট. আকসিজুল ইসলাম রতন, এ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, ডা.ফকির মোহাম্মদ, হাবিল হোসেন জোয়ার্দ্দার, মনোনিত সদস্য এএইচএমএম কামাল তুহিন, সাইফুল হাসান জোয়ার্দ্দার ও আবু সাইদ মো. আহসানুজ্জামান। কমিটির গুরত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনের আস্থাভাজন ও একান্ত অনুসারিরা।