ঢাকা ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তিতাসে বন্যা

কৃষি ও মৎস্য খাতে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

কৃষি ও মৎস্য খাতে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার গোমতী নদীর বাঁধের উপর দিয়ে এবং বাঁধ ভেঙে কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। এতে অসংখ্য বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক, ফসলি-জমি ও ছোট-বড় পুকুর তলিয়ে কৃষি ও মৎস্য খাতে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, উপজেলার ভিটিকান্দি নারান্দিয়া, জিয়ারকান্দি ও কলাকান্দি ইউনিয়নে বীজতলা, আউশ ধানের জমি ও বিভিন্ন সবজি খেতসহ প্রায় ১ হাজার ২৭৯ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থ ৪টি ইউনিয়নে ৩৩৫ হেক্টর ভূমিতে আউশের আবাদ করা হয়েছিল, যার মধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৩০৫ হেক্টর জমির ফসল। এ ছাড়া প্রায় ৯ হেক্টর জমির শাক-সবজি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় ছোট-বড় পুকুরসহ মাছের প্রজেক্ট রয়েছে ৯৬৮টি, নদী ৩টি, খাল ১০টি ও প্লাবন ভূমি রয়েছে ১৬টি। ৪২৯টি পুকুর ঢলের পানিতে তলিয়ে ভেসে গেছে প্রায় ২০ লক্ষ ১০ হাজার টাকার ১০ মে. টন ফিন ফিশ এবং ১৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকার ৩০ লক্ষ পোনা মাছ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বন্যার পানিতে কলাকান্দি ইউনিয়নের খানেবাড়ি গোবিন্দপুর, কালাইচান্দকান্দি, দড়ি মাছিমপুর, কলাকান্দি, কাউরিয়ারচর, আফজালকান্দি, দক্ষিণ ও উত্তর মানিকনগর, ভিটিকান্দি ইউনিয়নের হরিপুর, দাসকান্দি, ঘোষকান্দি, দুলারামপুর (একাংশ), দড়িকান্দি (একাংশ), নারায়নপুর, রতনপুর, পোড়কান্দি, ভিটিকান্দি ও আলীনগর এবং নারান্দিয়া ইউনিয়নের পূর্ব ও পশ্চিম নারান্দিয়াসহ উপজেলার প্রায় ত্রিশটি গ্রাম প্লাবিত হয়। সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে উপজেলার কলাকান্দি গ্রামের মো. মোমেন এবং মানিকনগর গ্রামের শাহাবুদ্দিনসহ একাধিক মৎস্য চাষি জানান, ঢলে তাদের বেশিরভাগ পুকুর, মৎস্য প্রজেক্ট তলিয়ে ভেসে গেছে মাছ। এত বড় লোকসান কীভাবে পূরণ করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা। এরই মধ্যে অনেক চাষি তাদের ক্ষতির পরিমাণ জানিয়ে উপজেলা মৎস্য অফিসে অনুদানের জন্য আবেদন করেছেন। উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোসাম্মৎ নাজমা আক্তার জানান, উপজেলার ৪২৯টি পুকুরে ঢলের পানিতে তলিয়ে অন্তত ৪৫ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ আরো বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার সাঈদ আব্দুল্লাহ মোস্তাফিন বলেন, বন্যায় উপজেলার ৩ হাজার ৩৪২ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান, বীজতলা ও অন্যান্য ফসলে প্রায় ২ কোটি ৯২ লাখ টাকার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে চলতি বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। যদি কোনো সরকারি অনুদান আসে তা কৃষকদের মাঝে বণ্টন করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত