ঢাকা ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কালিয়াকৈরে দুটি ওষুধ কোম্পানিতে শ্রমিক অন্তোষ

মহাসড়ক অবরোধ বিক্ষোভ-যানজট
কালিয়াকৈরে দুটি ওষুধ কোম্পানিতে শ্রমিক অন্তোষ

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বৈষম্যবিরোধী অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে একুশ দফা দাবিতে গতকাল শনিবার সকালে পৃথক এলাকায় দুটি ওষুধ কোম্পানিতে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ রেখে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। এতে মহাসড়কের উভয়পাশে তীব্র যানজট হলে চরম দুর্ভোগে পড়েন পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করলে প্রায় ঘণ্টা পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এলাকাবাসী, বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর বোর্ডঘর এলাকায় স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস্ পিএলসি এবং উপজেলার হরিণহাটি এলাকায় এ্যাপেক্স ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড নামে দুটি ওষুধ কারখানায় এই শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। প্রতিদিনের মতো গতকাল শনিবার ভোর ৫টার দিকে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস্ পিএলসি নামে ওষুধ কোম্পানির শ্রমিকরা কর্মস্থলে যায়। কিন্তু কাজে যোগ না দিয়ে বৈষম্যবিরোধী শ্রমিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ওই ওষুধ কোম্পানির সামনে কর্মবিরতি শুরু করে।

এ সময় তারা অবিলম্বে ওই কোম্পানির এইচ আর ডি, এজিএম সুরজিৎ মুখার্জি, প্রোডাকশন সিনিয়র ম্যানেজার দিপালক কর্মকার, সিনিয়র ম্যানেজার জাহিদুর রহমান, এইচ আর ডি শামীম আক্তার, এইচ কেভি ইনচার্জ রুহুল আমিনের পদত্যাগ, শুক্রবারে বেতন, সরকারি ছুটি ও ঈদের ছুটির টাকা, বেতন বৃদ্ধি, বৈষম্যবিরোধী শ্রমিক অধিকার আন্দোলনে কোনো কর্মীকে পরবর্তী সময়ে কোনো প্রকার হয়রানি বা চাকরিচ্যুত না করা, সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিন করাসহ ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করে। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষের কোনো সারাশব্দ না পেয়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পাশের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় তারা মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে একুশ দফা দাবিতে বিভিন্ন স্লোগানে বিক্ষোভ মিছিল করে। এতে মহাসড়কের উভয়পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলে চরম দুর্ভোগে পড়েন পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করলে প্রায় ঘন্টা পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে উঠে ওই কোম্পানির ভেতরে গিয়ে কর্মবিরতি পালন করে।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, ওই কোম্পানিতে ১০ বছর চাকরি করলেও শ্রমিকদের পার্মানেন্ট করা হয়নি। ১৫-২০ বছর ধরে চাকরি করেও শুক্রবারে বেতন পাই না। সরকারি ছুটি ও ঈদের ছুটির টাকা পাই না। এমন কোনো কোম্পানি বাংলাদেশে আছে? এছাড়াও সকাল ৫টার দিকে অফিসে আসি বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে অফিস থেকে আমরা বের হই। কিন্তু দুপুরে খাবার দেয়া হয় না। প্রত্যেক শ্রমিককে দুই বেলা খাবার পাস দিতে হবে ও খাবার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার বৈষম্য রাখা যাবে না। খাবার মান উন্নয়ন করতে হবে। খাবার মেনু পরিবর্তন করতে হবে। ন্যায্য দাবি তুললেই কোম্পানির কর্মকর্তারা চাকরিচ্যুতির হুমকি দেয়। তাই সব মিলিয়ে ২১টি দফা দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। তবে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।

অপরদিকে একই সময়ে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস্ পিএলসি কোম্পানির মতো বিভিন্ন দাবিতে উপজেলার হরিণহাটি এলাকায় অ্যাপেক্স ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড নামে ওষুধ কোম্পানির শ্রমিকরাও আন্দোলনে নামেন। তারা ওই এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে সেখানেও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে প্রায় ঘন্টাখানেক পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে এব্যাপারে ওই দুই ওষুধ কোম্পানির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত