গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় বেড়িবাঁধ তীব্র আঁকারে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে রায়পুর ইউনিয়নের উঠান মাঝির ঘাট ও বাইগ্যের ঘাটের বেড়িবাঁধ ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বেড়িবাঁধ ভাঙনের ফলে ১৫ গ্রামের লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানান স্থানীয়রা। এই বেড়িবাঁধ যদি ভেঙ্গে যায় পানির সঙ্গে তলিয়ে যাবে ১৫ গ্রামের মানুষ। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাইগ্যের ঘাট বেড়িবাঁধ এলাকায় রায়পুর ইউনিয়নের বেড়িবাঁধে প্রায় ৫০০ ফুটজুড়ে ভাঙনে হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত বেড়িবাঁধ সংরক্ষণের জন্য কিছু করা না হলে বেড়িবাঁধ সাগরে তলিয়ে যাবে। আবদুর রশিদ নামের এক স্থানীয় মুরুব্বি জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বেড়িবাঁধ ভাঙন হচ্ছে। এটা যদি কোনোভাবে রোধ করা না যায় আমরা ১৫ গ্রামের মানুষ খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই মুহূর্তে আরো জিও টিউব ও জিও ব্যাগের মাধ্যমে আপদকালীন ব্যবস্থা যদি না নেয়া হয় তাহলে এটা যে কোন মুহূর্তে পানির নিচে তলিয়ে যাবে। স্থানীয় জেলে শের আলী বলেন বিগত কয়েক বছর যাবত দেখতেছি এই বেড়িবাঁধ ভাঙা, আমি জনপ্রতিনিধি, এমপি মন্ত্রী চেয়ারম্যান আসতে দেখেছি কিন্তু কাজের কাজ একটুও করতে দেখি নাই। আমি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে কাছে আবেদন জানাই এই বেড়িবাঁধ দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে আমাদের যেন রক্ষা করে? স্থানীয় আরো কয়েক জনের সঙ্গে কথা বললে তারা আমাদের জানান যদি এই বেড়িবাঁধের কাজ অতি দ্রুত না করা হয় আমাদের অবস্থা ফেনী, নোয়াখালী ও খাগড়াছড়ি, ফটিকছড়ি চেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করবে? পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে ২০১৮ সালে সরকার ৩২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের উন্নয়নে ৫৭৭ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু করে। প্রকল্পে রায়পুর ইউনিয়নের ১৩ কিলোমিটারের মধ্যে ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধে পাথরের ব্লক বসানো হয়। বাকি ৫ কিলোমিটার এলাকায় মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ এবং ৫ কিলোমিটারের মধ্যে গহিরা সাগর উপকূলে ২ হাজার ৭০০ মিটার রয়েছে। এই ৫ কিলোমিটারের জন্য নতুন করে আবারো ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানায়। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে শহীদ জানান, রায়পুর ইউনিয়নের ৫ হাজার ১৭৫ মিটার বেড়িবাঁধে ব্লক বসানোর জন্য নতুন করে ৩৯৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।