চাঁদপুর শহরের পালবাজার ও পুরানবাজারে ভারতীয় কাঁচা মরিচের দাম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা ধরে। সেই কাঁচা মরিচই পালবাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারে খুচরা বিক্রেতারা প্রতারণার মাধ্যমে বেশি দামে বিক্রি করে যাচ্ছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ও পালবাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় কাঁচা মরিচ খুচরা বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা ও সর্বনিম্ন ২০০ টাকা পর্যন্ত। এ অবস্থা বিরাজমান থাকায় ক্রেতা সাধারণ মারাত্মকভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছে এবং মরিচ ক্রয় করে ঠকতে হচ্ছে বলে ভুক্তভোগী ক্রেতাদের কাছ হতে অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার শহরের পালবাজার, পুরানবাজার, নতুনবাজার, বিপনীবাগ, শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে ও ফুটপাতে এমন চিত্র প্রত্যক্ষভাবে পরিলক্ষিত হয়।
দেখা যায়, এসব বাজারের পাইকারি আড়তে প্রতি কেজি ভারতীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে। সেই মরিচই হাত বদল হয়ে দুইগুণ থেকে তিনগুণ বৃদ্ধি করে খুচরা বাজারে বিক্রি করে বেশি মুনাফা করে যাচ্ছে। এ অবস্থা দেখার যেন কেউ নেই। সরেজমিন কয়েকটি বাজার, শহরতলীর বাজার, ফুটপাতের ভ্যানে করে বিক্রি করা ও উপজেলা পর্যায়ে হাট-বাজারে, মরিচ বিক্রেতাদের মরিচ বিক্রি করার খবর নিয়ে যা জানতে পারি। তা হচ্ছে, চাঁদপুর জেলা সদরের বড় বড় পাইকারি আড়তে এ ভারতীয় মরিচ একশ্রেণির ব্যবসায়ী ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে আমদানি করে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকে। সে আমদানিকারক রসুল খার ছেলে বাদশা ও হালিম পাটওয়ারির ছেলে রিপনের সাথে আলাপকালে তারা জানান, ভারত থেকে প্রতি কেজি মরিচ শুল্ক ও ভ্যাট দিয়ে প্রতি কেজি মরিচ ১১০ টাকা ক্রয় মূল্য পড়ে। সে মরিচ বিক্রি হচ্ছে, ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে। আড়তদারের খরচ দিয়ে কেজি প্রতি ২০ টাকা ৩০ টাকা মুনাফা হয়ে থাকে। চাঁদপুরে গত জুন-জুলাই এ দুই মাস চাঁদপুরের চর এলাকার ও বিভিন্ন স্থানের দেশীয় কাঁচা মরিচ এ এলাকার চাহিদা পূরণে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৬০ থেকে ৭০ টাকা পাইকারি দরে। সে কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে। হঠাৎ বন্যা ও বৃষ্টির পানির কারণে চর অঞ্চলের মরিচ নষ্ট হয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা জানান, এর পরই বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা পূরণে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা কাঁচা মরিচ বেশি দামে আমদানি করায় ও ভারতীয় কাঁচা মরিচ দিয়ে চাহিদা পূরণে বাজারে প্রতি কেজি পাইকারি বিক্রি হয় ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকায়। সে মরিচ খুচরা বিক্রি করতে দেখা যায় ১৩০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে। হঠাৎ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবিরাম বৃষ্টিপাত ও বন্যার পানি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যায় ব্যাপকভাবে। কয়েক দিন কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা বিক্রি হলেও কয়েক দিন পূর্বে ব্যবসায়ীরা আমদানি কম অজুহাতে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। আবার দেশের কোথায়ও কোথায়ও ৮০০ টাকা থেকে ১ হাজার ও ১২০০ টাকায় কাঁচা মরিচ বিক্রি খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ হয়। বৃষ্টি কিছুটা কমে যাওয়ায় ও ভারতীয় কাঁচা মরিচ প্রচুর আদানি হওয়ায় চাঁদপুরের পাইকারি আড়তে ১৫০ টাকা কাঁচা মরিচ বিক্রি হলেও চাঁদপুর শহরের কোর্টস্টেশন এলাকায়, পালবাজার খুচরা বাজারে, ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায়, পৌর সভার সামনে, কুমিল্লা রোড, কালীমন্দিরের সামনে, জোর পুকুর পাড়, নতুন বাজার, বিপনীবাগসহ শহরের বিভিন্ন স্থানের ভ্যানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় খুচরা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শহরতলীর মৈশাদী, বাবুরহাট, শাহাতলী বাজার, মহামায়া বাজার, ইচলী, বাগড়াবাজার, ফরাক্কাবাদ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা দরে।
এছাড়া চাঁদপুর সদরের আড়ত থেকে ব্যবসায়ীরা কাঁচা মরিচ ক্রয় করে সে কাঁচা মরিচ বিভিন্ন উপজেলায় নিয়ে বিক্রি করছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। বিশেষ করে উপজেলার বন্যাদুর্গত কচুয়া, শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, হাইমচর এলাকায় ঘুরে জানা যায়, এসব স্থানের ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করছে। এ বিষয়ে চাঁদপুর শহরের খুচরা কাঁচা মাল ব্যবসায়ী বিক্রেতা মজিবুর রহমান, মনির হোসেন, মান্নান মিয়া জানান, বাজার দর সকালে, দুপুরে ও বিকালে ওঠা নামা করে। যার দরুণ কেউ বেশিতে কিনায় বেশি বেচে। আবার যারা কমে কিনতে পারে তারা কম দরে বিক্রি করে। বাজারদর ঠিক হতে আরো সময় লাগবে।