ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

এলজিইডির ২৪০০ উপসহকারী

প্রকৌশলী পদোন্নতি বৈষম্যের শিকার

প্রকৌশলী পদোন্নতি বৈষম্যের শিকার

এলজিইডির চিহ্নিত ২০ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কারণে সারা বাংলাদেশে মাঠপর্যায়ে কর্মরত ২৪০০ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা পদোন্নতি বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডির) ২০ জন চিহ্নিত উপ-সহকারী প্রকৌশলী বিগত ১৫-১৬ বছর স্বৈরাচারী ক্ষমতাসীন দলের পিষ্ট পোষকতায় এলজিইডির সদর দপ্তরে কর্মরত আছে এবং রাজধানী শহরে থেকে সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছে। এসব কৌশলীরা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সনদপ্রাপ্ত হয়ে এলজিইডিতে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগদান করেন। এই চাকরির শর্তমতে জৈষ্ঠতার ভিত্তিতে তাদের সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি হবার কথা, এছাড়া কোনো প্রকার উচ্চতর ডিগ্রির পরিপ্রেক্ষিতে পদোন্নতি প্রাপ্তির কোনো সুযোগ নেই। এমনটিই এলজিইডির চাকরির বিধিতে উল্লেখ আছে। কিন্তু ওই ২০ জন উপসহকারী প্রকৌশলী সদর দপ্তরে চাকরির সুবাদে দাপ্তরিক নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেছে। সার্টিফিকেট প্রাপ্তি সাপেক্ষে মিথ্যা তথ্য-উপাত্যের ভিত্তিতে তৎকালীন স্বৈরাচারী রাজনৈতিক তৎপরতায় আদালতের একটি মনগড়া রায়কে পুঁজি করে সরকারি বিধিমালার তোয়াক্কা না করে জৈষ্ঠতার নিম্নধাপ থেকে সহকারী প্রকৌশলী পদে পদায়নের জন্য এলজিইডির প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা এবং বর্তমান প্রধান প্রকৌশলীকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে আসছে। সেই কারণেই সরকারি বিধিমোতাবেক জৈষ্ঠতার ক্রমভিত্তিতে পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্য প্রায় ২৪০০ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী পর্যায়ক্রমে পদোন্নতি বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে কর্মরত জৈষ্ঠ উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে কর্মরত থেকে দেশের উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন করে আসছেন। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে কর্মরত থাকায় অনেক জৈষ্ঠ উপ-সহকারী প্রকৌশলীর ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তির সুযোগ হতে বঞ্চিত হয়েছে। বর্তমানে জৈষ্ঠ উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা শূন্য পদের বিপরীতে ১৫০-২০০ জনের চাকরিকাল প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই ১৫০-২০০ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী জৈষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি প্রদানের জন্য এলজিইডির প্রশাসনের বৈষম্যবিরোধী কমিটি ও প্রধান প্রকৌশলী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: আশরাফুল ইসলাম জানান, এই চিহ্নিত ২০ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী জৈষ্ঠতার তালিকার নিম্নধাপ থেকে পদোন্নতি পেলে এলজিইডির জৈষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির ধারাবাহিকতা ভেঙে পড়বে।

অন্য আরেকজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: মেজবাহুর রহমান বলেন, ওই ২০ জনের পদোন্নতি দেয়া হলে দেশ উন্নয়নের মূল কর্ণধর মাঠপর্যায়ে কর্মরত ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদোন্নতির রাস্তা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে এবং এলজিইডির তথা দেশের উন্নয়নমূলক কাজ স্থবির হয়ে পড়বে। তিনি আরো বলেন, কোনো সরকারি চাকরিতে যোগদানের পর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের পরও জৈষ্ঠতার ভিত্তিতে ছাড়া পদোন্নতি প্রাপ্তির কোনো সুযোগ নেই। এছাড়াও সহকারী প্রকৌশলী মো: শফিকুল আজম ও অবসরপ্রাপ্ত একজন পদোন্নতি প্রাপ্ত উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, দেশের সকল প্রকৌশল অধিদপ্তরে ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদোন্নতির যে সরকারি আইন বিদ্যমান রয়েছে, সে প্রেক্ষিতে ২০ জনের জৈষ্ঠতা ছাড়া পদোন্নতি প্রদান করা হলে চাকরি বিধির পরিপন্থি হবে এবং ডিপার্টমেন্টের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে। এ বিষয়ে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আলী আক্তার মহোদয়ের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এলজিইডির অনুমোদিত জৈষ্ঠতার তালিকা ভিত্তিতে জৈষ্ঠ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের আগে পদোন্নতি দেয়া হবে এবং এর বাইরে অন্য কোনো সুযোগ নেই। প্রধান প্রকৌশলীর কাছে ওই চিহ্নিত ২০ জনের আদালতের রায়ের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এব্যাপারে আমাকে জানানো হয়েছে, তবে এদের ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত