ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ঢলে ভেঙেছে মাধবপুরে চা-বাগান

ঢলে ভেঙেছে মাধবপুরে চা-বাগান

বছর বছর অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের তীব্র স্রোতে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ৫টি চা বাগান ভেঙে যাচ্ছে। ৫টি চা বাগানে ভূমি ধসে প্রতি বছর শত শত চা গাছ ও ছায়া বৃক্ষ নষ্ট হচ্ছে। চা বাগান রক্ষার সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগ নেই। শুধু বাগান নয় বাগানের ছোট সেতু রাস্তা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। রাস্তা গুলো বাগানের নিজস্ব উদ্যোগে কোনো রকম মেরামত করা হলেও চা বাগান ভাঙা রোধ করা যাচ্ছে না। আগ্রাসী ঢলে বছর বছর বাগান ভেঙে ছড়ার পরিধি বিশাল আকার ধারণ করেছে। একেকটি ছড়া আগে সরু খালের মত ছিল কিন্তু এখন এগুলো ঢলে চা বাগান পাড় ভেঙে নদীর মত হয়ে গেছে। প্রতি বছর ঢলে বিশাল টিলা ভেঙে প্রকৃতির স্বাভাবিক ভূপ্রকৃতি নষ্ট হচ্ছে। বাগান কর্তৃপক্ষ প্রকৃতির এই আগ্রাসন শুধু বছর বছর চেয়ে চেয়ে দেখেন। কারণ তাদের কোনো সাধ্য নেই ভাঙন রোধ করা। মাধবপুর উপজেলার ৫টি চা বাগান নোয়াপাড়া, বৈকুন্ঠপুর, জগদীশপুর, সুরমা ও তেলিয়াপাড়া চা বাগানে প্রতি বছর ঢলের স্রোতে বাগানের বড় বড় টিলা ভেঙে যাচ্ছে। এসব চা বাগানের পূর্বদিকে রয়েছে রঘুনন্দন ও সাতছড়ি পাহাড়। পাহাড় ঘেষে ৫টি চা বাগানের অবস্থান। নোয়াপাড়া চা বাগানের শ্রমিক নেতা খেলু নাযেক বলেন, বাগানের ভেতরে অসংখ্য ছোট বড় ছড়া নালা রয়েছে। এর পূর্বদিকে রযেছে টিলা বেষ্টিত পাহাড়ি বনভূমি। পাহাড় ও চাবাগানে ভূপ্রকৃতি দেখতে একই ধরনের। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে অতি বর্ষণ হলে পাহাড় ও চা বাগানের পানি বাগানের নদী ছড়ায় পড়ে বাগানের টিলা ভেঙে বাগানের বড় ক্ষতি হয়। এ বছর বাগানের অনেক টিলা ভেঙে গিয়ে চা গাছ নষ্ট হয়েছে। সুরমা চা বাগানের সুবোধ তাতী বলেন, সবচেয়ে বেশি টিলা ভেঙেছে সুরমা চা বাগানে। সাতছড়ি পাহাড়ের পশ্চিম দিকে চোখ পড়লেই দেখা যায় কিবরিয়াবাদ সেকশনে বিশাল উচ্চতার টিলা ভেঙে পড়েছে সাতছড়ি ছড়ায়। পাহাড় ধসের কারণে চা বাগানও বিলিন হয়ে যাচ্ছে। শত শত চা গাছ ছড়ায় বিলিন হয়ে গেছে। একই অবস্থা তেলিয়াপাড়া চা বাগানে। ভাঙন রোধ করার ব্যবস্থা নেই বাগানের তরফে। এভাবে বছর বছর পাহাড়ি ও চা বাগানের টিলা ভেঙে বাগানের পাশাপাশি প্রকৃতির বিরাট ক্ষতি হচ্ছে। জগদীশপুর ও বৈকুন্ঠপুর পুর চা বাগানেও পাহাড়ি ঢলে চা বাগান ধসে যাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার মাধবপুর শাখার প্রতিনিধি ওমাইয়া ফেরদৌস বলেন, পাহাড়ি ঢলে চা বাগান রক্ষা করার উদ্যোগ সরকারিভাবে নেয়া দরকার। কারণ বাগানের ভেতর প্রবাহিত ছড়াগুলো বালু মাটির চর থাকায় ঢলের পানি সঠিক ভাবে প্রবাহিত হয় না। তাই বাগান ভেঙে চা গাছের ক্ষতি ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তাই ছড়ার প্রতি নজর দেয়া দরকার। সুরমা চা বাগানের ব্যবস্থাপক বাবুল সরকার জানান, এখন পাহাড়ি ঢলে চা বাগানের অনেক ক্ষতি হচ্ছে আমাদের চোখের সামনে। কিন্তু প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ রোধ করার বাগানের কোনো সামর্থ্য নেই। তবে সরকারিভাবে ছড়া বা নদীর গতি প্রকৃতি সহজ করে টিলার ভাঙন রোধ করা যেতে পারে। সরকারকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার দাবি করছি। এতে বাগান ও প্রকৃতির মঙ্গল হবে। মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম ফয়সাল জানান, পাহাড়ি ঢলে চা বাগানের টিলা ধসে অনেক বিপর্যয় হচ্ছে। টিলা ধস কিভাবে রোধ করা যায় বিষয়টি সরকারের নজরে আনা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত