সুন্দরবনে নিষেধাজ্ঞা শেষে
মাছ ও কাঁকড়া শিকার করতে বনে ঢুকছে জেলেরা
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
জুন, জুলাই, আগস্ট তিন মাস নিষেধাজ্ঞা শেষে গত রোববার থেকে সুন্দরবনে মাছ, কাঁকড়া, মধু আহরণ করতে জেলেরা প্রবেশ করতে শুরু করেছে। হাজারো পদচারনায় সুন্দরবন পূর্বের ন্যয় আবারো সরব হয়ে উঠছে। পূর্ব ও পশ্চিম সুন্দরবনের ১৬টি ফরেষ্ট ষ্টেশন থেকে ১২ হাজার বৈধ বিএলসিধারী জেলে পাস পারমিট নিয়ে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন পশ্চিম সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহাম্মদ মহসিন হোসেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল প্রথম দিনে অর্ধেক বিএলসিধারী জেলে পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। মাছের জন্য খেওলা, চরপাতা ও গয়সা জালের পাস ইস্যু করা হয়েছে। রেকর্ড সংখ্যক কাঁকড়ার পারমিট নিয়েছেন জেলেরা। তবে মধু আহরনের জন্য এখনো পর্যন্ত ফরেষ্ট স্টেশন থেকে মৌয়ালরা পাস গ্রহণ করেননি। স্টেশন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন দু’এক দিনের মধ্যে মধু সংগ্রহের পাস নিতে মৌয়ালরা হাজির হবেন। গত সোমবার সকাল ১১টায় কয়রার দেউলিয়া মাছের আড়ত ও বেদকাশির ফুলতলা আড়তে দিয়ে দেখা যায় সুন্দরবনের চিংড়ি, দাতনে, পারশে, কাউন, পায়রা, চ্যাটাবেলে, ভেটকি, পেশাসহ অন্যান্য মাছে আড়ত ভরে উঠেছে। তবে ছোট প্রজাতির মাছের পরিমাণ বেশি দেখা যায়। বন বিভাগের নির্দেশনা না মেনে অনেক জেলে ঘন ফাঁসের চরপাতা ও ভেষালি জালে মাছ শিকার করায় চিংড়িসহ ছোট মাছ বেশি ধরা পড়েছে। তবে রেকর্ড পরিমাণ মাছ জালে ধরা পড়ায় জেলেরা বেশ খুশি। ৫নং কয়রা গ্রামের জেলে গোলাম সরদার জানায়, তিন মাস পর কাশিয়াবাদ ফরেষ্ট স্টেশন থেকে পাস নিয়ে গত রোববার রাতে সুন্দরবনে চরপাতার জালে মাছ ধরতে দিয়ে আশানুরূপ মাছ পেয়েছি। মহেশ্বরীপুরের জেলে আজিুজল জানায় বানিয়াখালি ফরেষ্ট স্টেশন থেকে পাস নিয়ে বনে মাছ শিকার করে প্রথম দিনে ভালো মাছ পেয়েছি। তিন মাস পর পাস পারমিট চালু হওয়ায় জেলেদের চোখে মুখে হাসির ছাপ লক্ষ্য করা গেছে। জেলেদের অভিযোগ মাছ, কাঁকড়া শিকারের বৈধ অনুমতি পত্র বিএলসি নবায়নে ফরেষ্ট স্টেশন সরকারি রাজস্ব অতিরিক্ত ২০/২৫ গুণের বেশি অর্থ নিয়েছেন। কোবাদক স্টেশনের চিহিৃত দালালচক্র এ কাজে জড়িত বলে স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন। দালালের কবলে শত শত জেলে বাওয়ালী দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি হয়ে পড়েছে। কাশিয়াবাদ ফরেষ্ট স্টেশন কর্মকর্তা নির্মল কুমার মণ্ডল বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর প্রথম দিনে ৫ শতাধিক বিএলসিধারী জেলে তার স্টেশন থেকে মাছ, কাঁকড়ার পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। ঘন ফাঁসের জাল ব্যবহার করে কেউ যাতে চিংড়িসহ ছোট প্রজাতির মাছ শিকার করতে না পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়েছে। এ জন্য অভিযান পরিচালান করা হবে।