ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

৬ লাখ টাকার পাঠাগারে পড়ার জন্য নেই বই

৬ লাখ টাকার পাঠাগারে পড়ার জন্য নেই বই

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পাঠাগারের একটি ঘর নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মাণের ৩ বছর কেটে গেলেও পড়ার জন্য কোনো বই নেই। ফলে কয়েক বছর থেকে ফাঁকা পড়ে রয়েছে পাঠাগারটি। স্থানীয়রা বলছেন, পাঠাগারটিতে বই না থাকায় নিয়মিত খোলা হয় না। বইয়ের ব্যবস্থা হলে এখানকার শিক্ষার্থীরা পড়ার সুযোগ পাবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- বছরের পর বছর অবৈধস্থাপনায় দখলে ছিল উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের মহিপুর মোড়ের কিছু অংশ। উপজেলা প্রশাসন অবৈধস্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে এবং স্থানীয় শিক্ষার্থীদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ‘পাবলিক লাইব্রেরি’ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের আওতায় পাঠাগারের ঘর নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয় ৬ লাখ ১৮ হাজার ৪৩৭ টাকা। এই টাকা দিয়ে ঘর নির্মাণ, পলেস্তারা, রং এবং দরজা-জানালা সব কিছুই করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠাগারটি উদ্বোধন করেন গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়্যারম্যান মো. আসজাদুর রহমান (মান্নু)। এতকিছু করার পরেও বই কেনার জন্য কোনো বরাদ্দই ছিল না পাঠাগারটিতে। স্থানীয় শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকরা বলছেন- পাঠাগারটি দীর্ঘদিন আগে নির্মাণ করা হয়। তারপর থেকেই বন্ধ দেখা যায় ঘরটি। সরকারের তরফ থেকে ঘরটি নির্মাণ করা হলেও বই নেই এখানে। যার কারণে নিয়মিত খোলা হয় না। বছরে বেশ কয়েকবার শিক্ষার্থীরা উদ্যোগ নিয়ে ঘরের তালা খুললেও পড়ার জন্য তাদের আনতে হয় বই। পাঠাগারটিতে বই রাখা হলে, শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পড়তে আসবে। দৈনিক পত্রিকাগুলো এখানে রাখা হলে অনেকেই আসবে খবরাখবর জানতে। কিন্তু এসবের কিছুই নেই। নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. মাহিনুর রহমান মাহিন বলেন, লাখ লাখ টাকা খরচ করে পাঠাগারটির ঘর নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এখানে কোনো বই নেই। যার কারণে পাঠাগারটি নিয়মিত খোলা হয় না। পাঠাগারটি এখন ঢেলে সাজানোর সময়। বই জোগানের পাশাপাশি পাঠাগারটি নিয়মিত খোলার জন্য একজন মানুষ প্রয়োজন। যাতে করে নিয়মিত পাঠাগারটি খোলা হয়। এতে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা এখানে পড়া লেখা করতে পারেন। স্থানীয় এক দোকানি আসাদুজ্জামান বলেন, পাঠাগারের জন্য যে ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে, এতে অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। কিন্তু বই না থাকায় কোনো কাজে আসছে না। নিয়মিত খোলা হয়না। স্থানীয়রা উদ্যোগ নিয়ে মাঝেমধ্যে ঘরটি খোলেন। এ বিষয়টিতে নজর দেয়া প্রয়োজন। পাঠাগার নির্মাণ কমিটির সভাপতি ও গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ইউসুফ আলী বলেন, স্থানীয় শিক্ষার্থীদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পাবলিক লাইব্রেরী নির্মাণ করা হয়। ঘরটি নির্মাণের জন্য ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও বই কেনার জন্য কোনো বরাদ্দ ছিল না। তারপরেও বাড়িতে আমার ব্যক্তিগত কিছু-কিছু বই ছিল, ওই বইগুলো এখানে রেখেছি পড়ার জন্য। পাঠাগারের ঘরটি খোলার জন্য লোকবল দরকার, সেটিও নেই। ফলে পাঠাগারটি নিয়মিত খোলা হয় না। গোবরতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম টিপু বলেন, পাঠাগারটি মাঝেমধ্যে খোলা হয়। একেবারে যে বন্ধ থাকে ঠিক তা নয়। এখানে বই থাকলে মানুষজন পড়তে আসত। বই নাই, পাঠাগারটি খোলার জন্য লোক নাই। এসব জোগান দেওয়া গেলে পাঠাগারটি নিয়মিত খোলা যেতো। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. তাছমিনা খাতুন বলেন, খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে; শিগগির সেখানে বইয়ের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে সেখানকার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে পারে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত