ফেনীতেই এবারের বন্যায় মারা গেছেন ২৮ জন। বন্যার ভয়াবহতা এতটা ছিল যে, অনেককে কবর দেয়ার মাটি পাওয়া যায়নি। প্রিয়জনকে হারিয়ে স্বজনেরা এখন বাকরুদ্ধ। জেলা প্রশাসন বলছে, বন্যায় মৃতদের পরিবারকে সহায়তা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বন্যার খবর পেয়ে গত ২১ আগস্ট ঢাকা থেকে ফেনী সদরের ছনুয়া ইউনিয়নে নিজ বাড়িতে যান নুরুল হুদা। চারদিকে তখন বুক সমান পানি। অসতর্কতায় প্রাণ হারান নুরুল। আশপাশে মাটি না থাকায় কলাগাছের ভেলা বানিয়ে বন্যার পানিতে স্বজনেরা ভাসিয়ে দেন প্রিয়জনের মরদেহ। নিহতের বাবা ও স্ত্রী জানান, এলাকায় যখন বুক-সমান পানি নুরুল হুদাকে ঘরের ভেতরে খাটের নিচে ডুবন্ত অবস্থায় পান তারা। অন্যদিকে ১০ দিন পর ভাসিয়ে দেয়া মায়ের মরদেহের খোঁজ পান সদর উপজেলার মোটবি ইউনিয়নের বাসিন্দা শহিদুল্লাহ। শহিদুল্লাহ বলছেন, মায়ের মরদেহ ভাসিয়ে দেয়ার পরও যে ফিরে পেয়েছেন এতেই তিনি সন্তুষ্ট। পারিবারিক কবরস্থানে মাকে দাফন করেছেন তিনি।
বন্যার পানিতে জেলায় ২৮ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ফুলগাজী ও সদরে সাতজন, সোনাগাজীতে ছয়জন, ছাগলনাইয়া ও দাগনভুঞাতে তিনজন এবং পরশুরামে দুইজন। ফেনী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, সাধারণত মরদেহের সন্ধান পেলে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ এ মরদেহগুলো উদ্ধার করে। এরই মধ্যে ২৪টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে আটটি এখনো শনাক্ত করা হয়নি। বন্যায় নিহতের পরিবারকে সহায়তা দেয়ার জন্য স্ব স্ব উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশনা দেয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোছাম্মৎ শাহিনা আক্তার। বৃষ্টি ও ঢলের পানিতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ৮৯টি স্থানে বাঁধ ধসে ফেনীতে সৃষ্টি হয় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা।