চাঁদপুরে বন্যায় সহস্রাধিক টিউবওয়েল বিকল

প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

এবারের বন্যায় দেশের সবচেয়ে বেশি আর্সেনিক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় ১ হাজার ৬০০ টিউবয়েল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বিশুদ্ধ পানির অভাবে পানিবাহিত রোগের পাশাপাশি বাড়তে পারে আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এসব টিউবওয়েল ব্যবহার উপযোগী করতে সহসা উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ। বিভিন্ন দপ্তর সূত্র ও পূর্বের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, দুই যুগ আগে দেশের সর্বোচ্চ আর্সেনিক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে এ উপজেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তারপর থেকে আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকে। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ২০১২ সালের পর থেকে সরকারিভাবে কোনো ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে না। সেখানে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫ হাজার ৬৬৯ জন আর্সেনিকোসিস রোগী শনাক্তকরণের হিসাব রয়েছে। তবে বাস্তবে এ সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়ভাবে এ পর্যন্ত উপজেলায় আর্সেনিকোসিস আক্রান্ত হয়ে ৩ জনের মৃত্যুর পরিসংখ্যান রয়েছে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস থেকে জানা গেছে, শাহরাস্তি উপজেলায় সরকারিভাবে ৫ হাজার ৭৬৩টি গভীর টিউবওয়েল রয়েছে। এর মধ্যে এবারের বন্যায় ১ হাজার ৬০০ টিউবয়েল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারিভাবে অগভীর টিউবওয়েল রয়েছে কয়েক হাজার। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ না হলে আর্সেনিক রোগীসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে বলে শঙ্কা গ্রামের লোকদের। উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের বেততলা গ্রামের বাসিন্দা মো, আকতার হোসেন শিহাব জানান, বন্যায় এলাকায় বেশিরভাগ টিউবওয়েল ডুবে গেছে। পানি নেমে গেলেও এগুলো ব্যবহারে অনুপযোগী হয়ে গেছে। তিনি আরো জানান, এখানে পূর্ব থেকেই পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি থাকায় আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েলগুলো পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় সুপেয় পানির সংকট প্রকট। চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের কোঁয়ার গ্রামের যুবক শান্ত হাসান জানান, বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও লোকজন ভয়ে ডুবে যাওয়া টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করছেন না। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম জানান, বিশুদ্ধ পানির সংকট কমাতে প্রায় ১৫ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। অতি দ্রুত ইউনিসেফের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত টিউবওয়েলগুলোতে হাইজিন কিট দিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করা হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. সারোয়ার হোসেন জানান, বন্যায় স্বাস্থ্য সচেতনতায় কাজ করা মেডিকেল টিমের সদস্যরা আর্সেনিকসহ পানিবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।