ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক

অভ্যন্তরীণ কোন্দল তুঙ্গে শিক্ষাক্রম ব্যাহত

অভ্যন্তরীণ কোন্দল তুঙ্গে  শিক্ষাক্রম ব্যাহত

যশোরের কেশবপুরে ঐতিহ্যবাহী সাগরদাঁড়ি মাইকেল মধুসূদন ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। এ বিরোধে শিক্ষকরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। এরই জেরে গত সোমবার এক পক্ষের শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষের পাঠদান বর্জন করে শিক্ষার্থীদের দিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে। এতে প্রতিষ্ঠানটি তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।

সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সাগরদাঁড়ি মাইকেল মধুসূদন ইনস্টিটিউশন। প্রধান শিক্ষক শ্যামল কুমার চৌধুরী যোগদান করার পর বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের বেতন বিল ধরানোর জন্য কতিপয় শিক্ষকসহ সাবেক ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবৃন্দ প্রধান শিক্ষকের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় এ বিরোধে ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ প্রতিষ্ঠানের তৎকালীন এডহক কমিটির সভাপতি অবৈধভাবে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে গৌতম কুমার দত্তকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়। এ দায়িত্ব পেয়েই ১৮ অক্টোবর গৌতম কুমার দত্ত নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষ্যে শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য মনোনয়নে জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে আবেদন করাসহ ম্যানেজিং কমিটি গঠন কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। অপর দিকে, প্রধান শিক্ষক শ্যামল কুমার চৌধুরী তার সাময়িক বরখাস্তাদেশ অবৈধ দাবি করে মহামান্য হাইকোর্টে মামলা করেন। যার নং- ৪৪৮৩/২৩। আদালত মামালাটি ১৯ মার্চ থেকে পরবর্তী ৬ মাসের জন্য স্থগিত রাখার আদেশ দেয়। বিগত ১৮ অক্টোবর শুনানি শেষে আদালত সাময়িক বরখাস্তপত্রটি বাতিল করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে পত্র দেয়। বোর্ডের নির্দেশে ১৯ অক্টোবর তিনি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বোর্ডের এ নির্দেশনা অমান্য করে দায়িত্ব হস্তান্তর না করে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ তালাবদ্ধ করে রাখেন। এ ঘটনায় ৮ নভেম্বর প্রধান শিক্ষক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে রূপ নেয়। এরই জেরে গত ০২ সেপ্টেম্বর (সোমবার) ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দিয়ে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ করতে ওই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে বলে অভিযোগ। ফলে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম একেবারেই ভেঙে পড়েছে। এলাকাবাসী প্রতিষ্ঠানটির ঐতিহ্য রক্ষার্থে বিষয়টি দ্রুত নিরসনের দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গৌতম কুমার দত্ত বলেন, প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে। এতে আমাদের হাত ছিল না। তার বেতন স্থগিতেও আমার হাত নেই। প্রধান শিক্ষক শ্যামল কুমার চৌধুরী আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দলে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গৌতম কুমার দত্তের যোগসাজশে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্যে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করে মানববন্ধন করেছে। তারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে আমাকে স্কুলে ঢুকতে দিচ্ছে না। এছাড়া, বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার বেতন-ভাতা বন্ধ রাখায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত