ভোলায় হঠাৎ বেড়েছে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা। জেলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন অর্ধশতাধিকের বেশি শিশু ভর্তি হচ্ছে। চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। বেড না পেয়ে হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে অনেকে। জানা গেছে, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। বেড না পেয়ে বেশিভাগ শিশু হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যারা বেড পাচ্ছেন তারাও এক বেডে ২-৩ জন গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে করে নানা সমস্যায় পরতে হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনদের।
ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের নাজমা বেগম জানান, নিউমোনিয়া হওয়ায় সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করি। এক বেডে ২-৩ জন করে শিশু রেখে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে করে বাচ্চার মায়েরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। বেডে আমরা মারা একটু বসতেও পারি না। দৌলতখান এলাকা থেকে আসা এক রোগীর মা লাইজু বেগম জানান, বাচ্চার নিউমোনিয়া হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করি। কিন্ত বেড না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে হাসপাতালের মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এভাবে শত শত রোগী হাসপাতালে বেড না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে।
লালমোহন উপজেলার চর উম্মেদ থেকে আসা আসমা আক্তার জানান, হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ, ক্যানোলা, নেবুলাইজার মাস্ক লিখে দিয়েছেন। নার্সরা বলছেন সেগুলো হাসপাতালে নেই। তাই টাকা দিয়ে ফার্মেসি থেকে কিনতে হয়েছে। জেনারেল হাসপাতালে মেঝে ও বেডে চিকিৎসা নেয়া শিশুদের স্বজন নুর জাহান বেগম, সবিতা রাণী ও মো. জসিম উদ্দিনের একই অভিযোগ। তারা জানান, দিনে একবার একজন চিকিৎসক আসেন বেড ও মেঝেতে ভর্তি রোগীদের দেখতে। তাও আবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। এ ছাড়াও নার্সরা ঠিকমত আসেন না। অনেক ডাকাডাকি করলে তারপর আসেন।
জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার কর্মকর্তা ডা. আবদুল মজিদ শাকিল বলেন, চিকিৎসক সঙ্কট থাকায় দৈনিক একজন করে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। বেশি পরিমাণ শিশু রোগী থাকায় অনেকটা হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।
হাসপাতালের নার্স সুপার ভাইজার নাছিমা বেগমও জানান সঙ্কটের কথা। তাই তারা রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। তারপরও প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। তবে একটি শিশুর চিকিৎসা সেবা দেয়ার সময় অন্য শিশুদের মায়েরা ডাকাডাকি করেন। ওই সময় তো চিকিৎসা সেবা শেষ না করে আসা সম্ভব নয়।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. ইমতিয়াজ বেলাল জানান, ওষুধ, ক্যানোলা, নেবুলাইজার মাস্ক ও স্যালাইন সঙ্কট রয়েছে। নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত এটি সমাধান করা চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গত ১৫ দিনে ৭৫০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন চার শিশু।