ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি দখল করে বাঁশতলা মৎস্য সেট নির্মাণ

প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শেখ আব্দুল হামিদ, কালীগঞ্জ (সাতক্ষীরা)

কালীগঞ্জে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি জবর দখল করে বাঁশতলা মৎস্য সেট নির্মানের অভিযোগ উঠেছে। বিগত সরকারের আমলে একটি প্রভাবশালী মহল অসহায় পরিবারের কোটি টাকা মূল্যের প্রায় এক বিঘা জমি দখল-নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে।

স্বরেজমিনে দেখা যায় জবর দখলকৃত জায়গায় গড়ে ওঠা ২০টি মৎস্য আড়ৎ (কাটা) গুলিতে প্রতি দিন ৩০/৩৫ লক্ষ টাকা বাগদা, চালি, হরিনা, গলদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাদামাছ ক্রয় বিক্রয় হয়ে থাকে। মৎস্য সেটটিতে সরকারি নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সরকার প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। স্থানীয় বাঁশতলা বাজার ও মৎস্য সেট ব্যাবসায়িদের কাছে থেকে জানা যায় ২০০২ সালে ফতেপুর মৌজার ঘলঘেষিয়া নদীর পাড়ে ওয়াপদার জায়গায় বাঁশতলা মৎস্য সেটটি গড়ে ওঠে।

পরবর্তীতে একই স্থানে নদীর উপরে ব্রিজ নির্মাণের কারণে মৎস্য সেটটির অস্থিত্ব হুমকির মুখে পড়ে। এক পর্যায়ে পাশ্ববর্তী জমির মালিক নুরুজ্জামান ঢালী পিতা- মৃত আব্দুর রহিম সাং-বন্দকাটি এর কাছ থেকে ২০০৫ সালে তার মালিকানাধীন প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের ফতেপুর মৌজার আর এস ১৪৬৭ দাগের প্রায় ০.৩৩ একর জমি বাৎসরিক ৩০ হাজার টাকা হারি-ভাড়া দেয়ার চুক্তিতে মৎস্য সেটের অনুকূলে দখলে নেয়া হয়। তৎকালীন বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সাগরের মাধ্যমে চুক্তির শর্ত মোতাবেক প্রথম বছরে ৩০ হাজার টাকা জমির মালিককে হারি প্রদান করা হয়। কিন্তু এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে জমির মালিক নুরুজ্জামান ঢালী গংদের ঘর ভাড়া /হারীর পাওনা টাকা প্রদান না করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, মৎস্য সেটের সভাপতি নুরুজ্জামান লালু ও কৃষকলীগ নেতা-মৎস্য সেটের সাধারণ সম্পাদক ইফতেখারুল ইসলাম সুমন মৎস্য সেটটিতে বহাল তবিয়তে ব্যাবসা করে যাচ্ছেন।

এ ক্ষেত্রে ২০ আড়ৎ-কাটায় ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিনিয়তে ভাড়া আদায়, লাইসেন্স নবায়নসহ প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। মৎস্য সেটটি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্রেতা- বিক্রেতাদের পদভারে মুখরিত থাকে। এক পর্যায়ে প্রতিটি আড়ৎ (ঘর) এর পজেশন হস্তান্তরিত মূল্য ১৫-২০ লক্ষ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এদিকে অসহায় জমির মালিক নুরুজ্জামান ঢালী তার প্রাপ্য হারি-ভাড়ার টাকা আদায়সহ জমি ঝবর দখল মুক্ত করা জন্য বার বার স্থানীয় প্রশাসনসহ আদালতের দারস্থ হলেও বিগত দিনে রাজনৈতিক প্রভাবে তার দাবি আদায় হয়নি। ভুক্তভোগী নুরুজ্জামন ঢালীর স্ত্রী জাহানারা খাতুন বলেন-আমরা বাঁশতলা সেট যে সময় তৈরি করি তখন একটি ঘর/কাটা ব্যাবহার করতাম, বাকি ঘরগুলো ভাড়া দেয়া ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ সেটের সভাপতি- সেক্রটারি, মৎস্য ব্যাবসায়ীরা/আড়ৎদার আনারুল ইসলাম, তৈয়েবুর রহমান, মনিরুল ইসলাম কারিকর, ঈমাম আলীরা আমাদের ভাড়া-হারির টাকা দিচ্ছে না। উপরোন্ত আমাদের জমি জবর দখল করে রেখেছে। এ বিষয়ে মৎস্য সেটের সভাপতি নুরুজ্জামান লালুর কাছে চানতে চাইলে তিনি বলে জমিটি খাস ছিল। ডিসিআর এর মাধ্যমে মৎস্য সেট দখল করে। তবে নুরুজ্জামান ঢালীর ব্যক্তি মালিকানার জমি হলে মাপ জরিপের মাধ্যমে দখল নিতে পারেন। মৎস্য সেটের সেক্রেটারি ও কৃষকলীগ নেতা ইফতেখারুল সুমনের সঙ্গে জায়গার বিরোধ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জবাব দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।