তিন ভাই ফিলিং স্টেশন

তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ মালিকের বিরুদ্ধে

টাকা চাইলেই মামলার হুমকি ফিলিং স্টেশনের মালিক সোবহান আলী ও তার লোকজনদের

প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি

বগুড়ার শেরপুরে তিন ভাই ফিলিং স্টেশনের মালিক সোবাহান আলী গংদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ব্যবসায়িক লভ্যাংশ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে স্থানীয় এলাকার সাধারণ মানুষদের নিকট থেকে ওই পরিমাণ টাকা নেন তারা। কিন্তু পাওনাদারদের সেই টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাতের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন। তাই টাকা ফেরত দেওয়ার নির্ধারিত সময় পার হলেও টাকা ফেরত দিতে তালবাহানা করছেন। পাশাপাশি গোপনে জমিসহ ওই ফিলিং স্টেশনটি বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন ওই চক্রটি। এদিকে জমিসহ ফিলিং স্টেশনটি বিক্রি খবর পেয়ে গতকাল রোববার সকাল থেকেই সেখানে পাওনাদারসহ তাদের লোকজন জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে ফিলিং স্টেশনটি দখলে নিয়ে টাকা ফেরত দেয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা এই কর্মসূচি থেকে দ্রুত টাকা পরিশোধে আল্টিমেটাম দেয়া হয়। এতে অংশ নেয়া শেরপুর বারোদুয়ারীপাড়ার শের আলী মন্ডলের মোজাম্মেল হক বলেন, ব্যবসায়িক লভ্যাংশ দেয়ার কথা বলে তিনভাই ফিলিং স্টেশনের মালিক উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের চৌবাড়ীয়া গ্রামের তাছের আলীর ছেলে আব্দুস সোবাহান আলী, সৈয়ব আলী ও মো. সুমন মিয়া তার নিকট থেকে ৪০ লাখ টাকা নেন। কিন্তু লভ্যাংশ দেয়া তো দূরের কথা, এখন আসল টাকাই দিচ্ছেন না। পাওনা টাকা চাইলেই নানা তালবাহানা করেন। এমনকি প্রাণনাশসহ অব্যাহতভাবে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি জমিসহ ফিলিং স্টেশনটি গোপনে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য বগুড়ার বেসরকারি এনজিও টিএমএসএস সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। তবে সেটি সফল হয়নি। বিপুল পরিমান টাকা নেওয়ার ঘটনাটি তাদের জানানোর পর এনজিও সংস্থাটি চুক্তি বাতিল করেছেন। শহরের উপশহরের বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম মিঠু অভিযোগ করে বলেন, তিনি ৫২ লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু টাকা চাইলেই মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার হুমকি দিচ্ছেন ফিলিং স্টেশনের মালিক সোবহান আলী ও তাদের লোকজন। তাই ভেবে কোনো কুলকিনারা পাচ্ছি না। একইভাবে শহরের খন্দকারপাড়ার বুলবুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলামের নিকট থেকে ৪১ লাখ টাকা, হামছায়াপুর গ্রামের রওশন আলীর নিকট থেকে ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, টাউন কলোনির আবুল কালাম আজাদের নিকট থেকে ১২ লাখ টাক, শালফা গ্রামের আব্দুর রহিমের নিকট থেকে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা ও বথুয়াবাড়ী গ্রামের ভুলু মিয়ার নিকট থেকে ৯ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে মানববন্ধনে জানানো হয়। বিষয়টি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চাইলে তিন ভাই ফিলিং স্টেশনের মালিক সোবাহান আলী কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।

শেরপুর থানার ওসি রেজাউল করিম রেজা এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, টাকা ফেরত পেতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে বলে শুনেছি। এছাড়া উক্ত ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে কি না তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। খোঁজ নিয়ে পরবর্তীতে বলা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।