ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নির্যাতনের পরও দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা

নির্যাতনের পরও দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা

নওগাঁর পত্নীতলায় সেই সাংবাদিক মাহমুদুন নবীর বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দিয়েছে ক্লিনিক মালিক সমিতি। অথচ নির্যাতনের শিকার মাহমুদুন নবীর পরিবারের অভিযোগ আমলে নেয়নি পুলিশ। পুলিশের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা। জানা গেছে, জেলার মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার দেওয়ান সবুর হোসেন জেলার পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর সিটি ক্লিনিকে প্রসূতির সিজার অপারেশন করেন। কিন্তু ভুল অপারেশনের অভিযোগ ওঠে প্রসূতির পরিবার থেকে। এ নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন ও আঞ্চলিক দৈনিক জয়পুরহাট খবর পত্রিকার প্রতিনিধি মাহমুদুন নবী সংবাদ প্রকাশ করেন। এছাড়া স্থানীয় ক্লিনিক ডায়াগনস্টিকে অব্যবস্থাপনা, অপচিকিৎসা ও চিকিৎসকের অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন দৈনিক মানবকণ্ঠ পত্রিকার প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম নামে অপর এক সাংবাদিক। অনিয়মের এসব সংবাদ প্রকাশের জেরে গত ৭ সেপ্টেম্বর মাহমুদুন নবী ও রবিউলকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায় ডাক্তার দেওয়ান সবুর হোসেনসহ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিকের ভাড়াটে বাহিনী। সিটি ক্লিনিকের ভেতরে আটকে রেখে মারধর করে তাদের উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। এক পর্যায়ে মাহমুদুন নবীর গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে নির্যাতনকারীরা। পরে তা ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিকরা দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন। কিন্তু সেই অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় নিরাপত্তা দিয়ে সাংবাদিকদের ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনার পর থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন মাহমুদুন নবী। লোক লজ্জায় তারা কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। এদিকে, নির্যাতনের ঘটনায় বাদী হয়ে ৯ সেপ্টেম্বর মাহমুদুন নবীর ভাই নূরু নবী পত্নীতলায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ সেই মামলা গ্রহণ করেনি। বিপরীতে ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক মালিকরা পুলিশের সাথে যোগসাজশ করে ঘটনার ৩ দিন পর চাঁদাবাজির একটি সাজানো মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় পত্নীতলা উপজেলার বেশ কিছু ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক থেকে কয়েক লাখ টাকার চাঁদা নেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে মাহমুদুন নবীর বিরুদ্ধে। এসব ঘটনার পর স্থানীয় সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ন্যায়বিচারের প্রার্থনায় আদালতে মামলা করবেন জানিয়ে নির্যাতনের শিকার মাহমুদুন নবী বলেন, ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সমিতির নেতারা প্রভাবশালী। রাজনৈতিক সুযোগ সন্ধানী। তাই তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। ঘটনা মীমাংসা করার জন্য চাপ দিচ্ছে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক রবিউল ইসলাম জানান, থানা পুলিশ রহস্যজনক কারণে ক্লিনিক মালিকদের মামলা গ্রহণ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের নাম ভাঙিয়ে দোহাই দিচ্ছে। এ বিষয়ে পত্নীতলা থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সমিতির লোকজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সাথে নিয়ে থানায় এজাহার দিতে এসেছিলেন। তাই তাদের অভিযোগ এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। যথাযথভাবে অভিযোগ করলে মাহমুদুন নবীর অভিযোগ আমলে নেয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত