কাউখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড
৭ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি নদীভাঙন রোধ প্রকল্প
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
এনামুল হক, কাউখালী (পিরোজপুর)
কাউখালীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদীভাঙ্গন রোধ প্রকল্প ৭ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১৮ সালে রাজ অ্যান্ড রাজ এন্টারপ্রাইজ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ওয়ার্ক অর্ডার পায়। যার স্বত্বাধিকারী পিরোজপুরের সাবেক মেয়র মো. হাবিবুর রহমান মালেক।
তবে সরেজমিনের কাজটি বাস্তবায়ন করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মনু। চলতি অর্থবছরে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো খোঁজ মিলছে না। যার ফলে কাউখালী খাদ্য গুদাম সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীর ভাঙন রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার প্রকল্প ভেস্তে যেতে বসেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ কাজ করা হবে বলে বার বার আশার বাণী শুনালেও বর্তমানে ঠিকাদারের কোনো খোঁজ মিলছে না। সন্ধ্যা নদীর তীব্র ভাঙনের ফলে কাউখালী গুদাম ঝুঁকি দেখা দিলে এলাকাবাসীর দাবির মুখে তৎকালীন সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু জরুরি ভিত্তিতে নদী ভাঙন রোধ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে এই প্রকল্প গ্রহণ করেছিলেন। কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত কিছু বালুর পাটের বস্তা, ও জিও ব্যাগ এবং কিছু ব্লক ফেলে বাকি কাজ বন্ধ করে রেখে দেয়। এরপর ৭ বছর অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত কাজের আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। সরেজমিন দেখা যায় খাদ্য গুদামের সামনে কিছু ব্লক দেখা যায় যেগুলো এখন শ্যাওলায় ভরা। কবে নাগাদ পাইলিংয়ের বাকি কাজ শুরু হবে, তা কেউ সঠিকভাবে বলতে পারে না। সন্ধ্যার তীব্র ভাঙন বাড়তে থাকায় যে কোনো সময় বিলীন হতে পারে কাউখালীর ঐতিহ্যবাহী খাদ্য গুদামের ৫টি ভবন। কাউখালীর খাদ্য গুদাম এক সময়ে বরিশাল বিভাগের দক্ষিণ অঞ্চলের পিরোজপুর জেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় খাদ্য গুদামজাত করার জন্য সরকারিভাবে খাদ্য চাল, গম সামগ্রী সরবরাহ করা হতো।
সরকারের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন রাস্তা ঘাট, ভেরিবাঁধ, খাল খনন, মাটিকাটাসহ বিভিন্ন কাজের শ্রমিকদের কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হত এখান থেকে। মূলত গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের এই সব উদ্যোগেই আজ বাংলাদেশেকে উন্নত রাষ্ট্রের মর্যাদার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আজ শত কোটি টাকার খাদ্য গুদাম সঠিকভাবে সংরক্ষণ করার জন্য নদী ভাঙ্গন রোধ করতে না পারলে ঐতিহ্যবাহী এই খাদ্য গুদামটি মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। খাদ্য গুদামের ভাউন্ডারির ওয়াল, প্রবেশ পথ ও জেটিসহ রাস্তা বহু আগেই নদী ভাঙেন বিলীন হয়ে গেছে। এখন সীমানা প্রাচীরও ভেঙে যাওয়ায় নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে মূল খাদ্য গুদামের ভবন। সীমানা প্রাচীর না থাকায় সরকারি বহু মূল্যবান সম্পদ ঝুঁকিতে রয়েছে। কাউখালী ওসিয়াল এসডিও আবুল কালাম জনান, খাদ্য গুদাম চত্বরে দীর্ঘ বছর ধরে ঠিকাদার ব্লক, পাথর, বালু, রেখে এলাকাটাই একটি পাথর বালুর স্তূপে পরিণত করে রেখেছে। ঝুঁকি নিয়ে লেবারদের কাজ করতে হয়। এ ব্যাপারে পিরোজপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নুসাইর হোসেন জানান, বর্তমান অর্থবছরে ঠিকাদারকে কোনো টাকা দেয়া হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে। তিনি আরো বলেন, কাজ শেষ না করলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কোনো বিল প্রদান করা হবে না।