জেলা পরিষদের রেন্ট্রি গাছ চুরির চাঞ্চল্যকর তথ্য

প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  যশোর প্রতিনিধি

যশোর জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ৬০ হাজার টাকা মূল্যের রেন্ট্র্রিগাছ চুরি নিয়ে জেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারউদের মধ্যে নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমে গাছ বিক্রি করে তা ধরা পড়ার পর নিজে বাঁচার জন্য ক্রেতা দুজনকে বলি দিতে একটু দ্বিধা করা হয়নি। তাছাড়া, গাছের মূল অংশ হাতে পেয়েও তা উদ্ধারে তেমন কোনো ভূমিকা না রাখায় ঘটনাটি চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া, যে পদ মর্যাদা ব্যবহার করে বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন এমন পদ জেলা পরিষদে আছে কি না তা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানেন না। তবে গাছ চুরির বিষয় দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা পরিষদের কর্মচারী সূত্রে জানা যায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুর আনুমানিক আড়াইটার সময় যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি-তালবাড়ীয়া পাকা সড়কের পাশে তরফ নওয়াপাড়া মৌজায় যশোর জেলা পরিষদের মালিকানাধীন সড়কের সীমানার মধ্যে সরকারিভাবে রোপণ করা বড় ধরনের একটি রেন্ট্রিগাছ অবৈধভাবে চুরি করে কাটা হচ্ছে। এমন খবরের ভিত্তিতে তৎক্ষণিকভাবে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে ওই দিন বিকাল ৩টায় জেলা পরিষদের বৃদ্ধ সংরক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মচারী দাবিদার আশরাফ হোসেনসহ জেলা পরিষদের ৪ জন ওই গাছের কাছে যায়। সেখানে যাওয়ার পর বাদী জানতে পারেন সদর উপজেলার শেখহাটি গ্রামের ইব্রাহীম বিশ্বাসের কাছ থেকে একই গ্রামের আশরাফুল ইসলাম রেন্ট্রি গাছটি ৪০ হাজার টাকায় ক্রয় করেন। যা বাদী ও তার লোকজনের সামনে ৫/৬ জন শ্রমিক গাছটি কাটছে। বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, বাদী ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই রেন্ট্রি গাছটির মূল্যবান বড় বড় ডাল ও জ্বালানি অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। অবৈধভাবে ও প্রকাশ্যে চুরি করে কাটা রেন্ট্রি গাছটির মূল গুঁড়ি ঘটনাস্থলে পড়ে থাকায় বাদী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আছাদুজ্জামানকে না জানিয়ে জেলা পরিষদ ভবনে না এনে ঘটনাস্থলের আশপাশে স্থানীয় লোকজনের জিম্মায় প্রদানের চেষ্টা করলেও আসামিদের ভয়ে কেউ জিম্মায় গ্রহণ করেননি বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। অথচ জেলা পরিষদের একজন কর্মচারীর বাড়ি ঘটনা স্থলের অদূরে। সূত্রগুলো বলেছেন, বাদী জেলা পরিষদের একজন ইলেকট্রিশিয়ান পদে কর্মরত। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা লুৎফর রহমান, সার্ভেয়ার আল আমিন ও জেলা পরিষদের দারোয়ান কাম-কেয়ার টেকার আসাদুল ইসলামকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে অন্য দুজন কাউকে বাদী না করে ইলেট্রিশিয়ান আশরাফ হোসেন বাদী হয়ে ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। কোতোয়ালি থানার মামলা নং ৩০, তারিখ ১০/০৯/২৪ইং ধারা ৩৭৯/৪২৭ পেনাল কোড। ওই মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই অনুপ কুমার দাস। মামলা হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টায় আসামি ইব্রাহিম বিশ্বাস ও আশরাফুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে পারেনি তদন্ত কর্মকর্তা অনুপ কুমার দাস। তাছাড়া, গাছটির মূল গুঁড়ি ও লগ ৯ সেপ্টেম্বর রাতে ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। এ কাজের সাথে জেলা পরিষদের কেউ জড়িত নইলে গাছের মূল অংশ ঘটনাস্থলে থাকলেও উদ্ধার করে হেফাজতে না আনায় ঘটনার ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। রেন্ট্রি গাছ চুরি সংক্রান্ত ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্রাধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাছ চুরি সংক্রান্ত ব্যাপারে জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত লুৎফর রহমানকে সদস্য করে দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি রিপোর্ট দেয়ার পর জেলা পরিষদের কেউ গাছ চুরির সাথে জড়িত কি না প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।