পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার কাউখালী সরকারি বালক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে এক ছাত্রের অভিভাবক শিক্ষা উপদেষ্টার নিকট অভিযোগ করেছেন। তিনি শিক্ষক আব্দুল জলিলের অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ গ্রহণ, কোচিং বাণিজ্য, প্রাইভেট পড়ানোসহ নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনে ডাকযোগে পেশ করেন।
অনৈতিক কার্যকলাপ করা তার একটি রুটিন ওয়ার্ক এ পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন। অভিযোগে সূত্র আরো জানা যায়- স্কুলের ছাত্রভর্তি, প্রশংসাপত্র, প্রবেশপত্র, বিভিন্ন পরীক্ষাসহ সব ধরনের কাজে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। অভিযোগকারী অভিযোগে উল্লেখ করেছেন তার ছেলে সাব্বির খান নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করার পর শারীরিক সমস্যার কারণে স্কুলে অনিয়মিত হয়ে পড়েছিল। একই কারণে সঠিক সময়ে পরীক্ষা দিতে পারেনি। পরবর্তী সময় তার ছেলে সুস্থ হলে তার কাছে নিয়ে যাওয়া হলে ফাইনাল পরীক্ষা দেয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অনুরোধ করেন। তিনি প্রথমে রাজি না হয়ে অভিভাবক সালামের কাছে সবাইকে ম্যানেজ করার কথা বলে ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ১০ হাজার টাকা প্রদান করে রফাদফা করা হয়। ২০১২ সালে পটুয়াখালীর জুবলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে বদলি হয়ে তিনি এই স্কুলে আসেন। সে ক্লাসে পাঠদানে অমনোযোগি থাকার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। এছাড়া স্কুলের উপরে দ্বিতীয় তলায় একটি রুমে বিধিবহির্ভূতভাবে তিনি বসবাস করেন। অনেক অভিভাবক, সাধারণ মানুষ, ছাত্ররা এই বিষয়ে অবগত আছেন।
কাউখালী সরকারি বালক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন অবসরজনিত কারণে ৮ সেপ্টেম্বর খুলনায় বদলি হয়। তার ১৫ সেপ্টেম্বর অবসরে যাওয়ার কথা। এই সুযোগে স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে আব্দুল জলিল বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার বিরুদ্ধে এতটা অভিযোগ থাকার পরেও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করায় সাধারণ মানুষের মাঝে ক্রমেই অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগকারী আব্দুস সালাম খান জানান, আমার ছেলের মতো আর কোনো মা-বাবাকে শিক্ষকের হাতে ঘুষ দিতে না হয়। এই কারণে আমি অনিয়মের বিষয়গুলো উল্লেখ করে ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য শিক্ষা উপদেষ্টাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তার বদলি ও ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আশা করি তাকে অপসারণ করে তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের আওতায় আনা হবে।
কাউখালী সরকারি কেজি ইউনিয়ন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল বলেন আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে এগুলো সঠিক না, অসত্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হয়েছে।
পটুয়াখালী সরকারি জুবিলী স্কুলের সম্প্রতি অবসরে যাওয়া প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ রুহুল আমিন জানান ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তিনি স্বেচ্ছায় স্কুল থেকে বদলি হয়ে চলে যান। পিরোজপুর জেলা প্রশাসক আশরাফুল আলম খান জানান আমি নতুন যোগদান করেছি। কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনিব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।