জানা গেছে, গত ১২ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কেশবপুরে থেমে থেমে ভারি বর্ষণ হয়। অতিরিক্ত বর্ষণের পানি আপারভদ্রা নদীতে নিষ্কাশনে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হরিহর ও বুড়িভদ্রা নদী উপচে পানি অববাহিকার কেশবপুর পৌরসভাসহ ৯টি ইউনিয়নে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যায় ১০৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। এতে ৩ হাজার ৬৪০টি মাছের ঘের ও ২ হাজার ৪২০টি পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গিয়ে দেড় কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়। এতে সর্বশান্ত হয়ে গেছে ঘের ব্যবসায়ীসহ ক্ষুদ্র মাছ চাষিরা।
তাদের মাছ ভেসে বিভিন্ন নদী, খাল-বিল ও উন্মুক্ত জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এ সুযোগে সৌখিন মাছ শিকারী ও মৎস্যজীবীরা মাছ ধরার খেপলা জাল, হুইল, সিপ নিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে মাছ শিকার করছে। বিভিন্ন এলাকার খাল, বিল ও উন্মুক্ত জলাশয়ে সারা দিন-রাত ধরে চলছে এমাছ ধরার মহা উৎসব। গতকাল সোমবার উপজেলার বিভিন্ন প্লাবিত অঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি সড়কের ব্রিজের সামনে মৎস্যজীবীরা খেপলা জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে। জালে রুই, কাতলা, মৃগেলসহ হরেক রকমের সাদা মাছ ধরা পড়ছে। দূর-দূরান্তের মানুষ এমাছ স্বল্প মূল্যে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
পরচক্রা বাজারের ব্রিজের সামনে মাছ শিকার করতে আসা হাড়িয়াঘোপের মোসলেমউদ্দীন জানান, প্রতিদিন মাছ বিক্রি করে তারা ২ থেকে ৩ হাজার টাকা আয় করছেন। দিনরাত ২৪ ঘন্টায় এখানে চলছে মাছ ধারার উৎসব। প্রথম প্রথম জালে বেশি মাছ ধরা পড়ছিল। তখন মাছের দামও কমছিল। তাদের শিকার করা মাছ উঁচু এলাকার ঘের মালিকরা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার দোরমুটিয়া কাউখোলা বিলে গিয়ে কথা হয় ভোগতী গ্রামের জালাল উদ্দীনের সঙ্গে। তিনি জানান, এখন প্রখর রোদ চলছে বলেই জালে মাছ কম ধরা পড়ছে। এ সময়ে মাছ শিকারীরা বিভিন্ন মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে কলার ভেলা বানিয়ে বিলের মাঝখানে সিপ ও হুইল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। হুইল এবং সিপে বড় ধরনের সাদা মাছ, তিলাপোয়াসহ হরেক রকমের মাছ ধরা পড়ছে। এমাছ বিক্রির টাকাই চলছে তাদের সংসার।
কেশবপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সজীব সাহা বলেন, এ উপজেলায় বন্যায় বন্যায় ১০৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। এতে ৩ হাজার ৬৪০টি মাছের ঘের ও ২ হাজার ৪২০টি পুকুর তলিয়ে মাছ ভেসে গিয়ে দেড় কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়।