হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে রোগী ১০ গুণ
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
মায়েদের কোলে শিশুরা। তাদের বেশিরভাগের মুখেই নেবুলাইজারের মাস্ক। অনেকের হাতে বিদ্ধ করা ইঞ্জেকশনের ক্যানোলাও। অসুস্থ এসব শিশুর অভিভাবকরা ছুটাছুটি করেন মুখে অস্থিরতার ছাপ নিয়ে।
হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে এ দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। হাসপাতালে নবজাতকদের বিশেষায়িত সেবা কেন্দ্র (স্ক্যানুতে) শয্যার বিপরীতে রোগীর সংখ্যা দশগুণ রয়েছে। সরজমিনে দেখা যায়, টানা কয়েকদিন তাপদাহের ফলে ঘাম থেকে সৃষ্ট ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত এসব শিশু রোগীর সেবা দিতে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা হিমশিম খাচ্ছেন। এ কারণে এক সপ্তাহে হাসপাতালটিতে ১৯ নবজাতক (২৮ দিন বয়সের মধ্যে) ও ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে দায়িত্বরতরা জানান। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড, স্ক্যানু এবং বহির্বিভাগে শিশু ও নবজাতক কোলে তাদের স্বজনদের দীর্ঘ লাইন। স্ক্যানুতে ১১টি শয্যার বিপরীতে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৯৫ জন। এর লাগোয়া কক্ষটিও শিশু রোগী ও তাদের স্বজনদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ। দায়িত্বরতরা জানান, স্ক্যানুতে রোজ একাধিক নবজাতকের মৃত্যু হচ্ছে। তাদের স্বজনদের কান্নায় দিনভর ওয়ার্ডের আশপাশে শোকের ছায়া লেগে থাকে। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্ক্যানুতে মারা গেছে ১৯ নবজাতক। দায়িত্বরত নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্ক্যানুতে ১১টি ওয়ার্মার সিট রয়েছে। ১০ গুণ রোগী থাকায় সিট ভাগ করে ও শিফট করে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বাগুনীপাড়া গ্রামের জনাব আলী বলেন- চিকিৎসক বলেছেন, তার শিশুকে ৭২ ঘণ্টা থেরাপি দিতে। কিন্তু স্ক্যানুতে লম্বা লাইন থাকায় ৫ মিনিট পরপর থেরাপী দেওয়া হচ্ছে। এর ভিতরে নবজাতক ছটফট করতে থাকে। অনেক শিশুকে হবিগঞ্জ থেকে সিলেটে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে। বহির্বিভাগে যোগাযোগ করলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মাসুদ রানা জানান, প্রতিদিন সেখানে ৩০০ জনের অধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্যেই রোগীর আধিক্য। ২৫০ শয্যা ভবনের পঞ্চম তলায় শিশু ওয়ার্ডে দেখা যায়, রোগী ও তাদের স্বজনদের উপস্থিতিতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। সেখানে শয্যা আছে ৫০টি। ভর্তি ছিল ২৪৭ শিশু। দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ দাশ রোগী দেখছিলেন। বিপুলসংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা দিতে তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। ওয়ার্ডটিতে গত এক সপ্তাহে ২ শিশুর মৃত্যু হয়।