চাঁদপুর

১৫ হাজার কৃষককে প্রণোদনা

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুর জেলার আট উপজেলায় চলতি ২০২৪-২৫ বছরের রবি মৌসুমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আগাম চাষাবাদের জন্যে ২০০ মে.টন বোরো ও ৮ মে টন সরিষাবীজ বরাদ্দ দিয়েছেন সরকার। সরকারি নির্দেশিত মোড়কে প্যাচানো বীজগুলো কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হবে। জেলার ৮টি উপজেলার ১২৮ জন সরকারি তালিকাভুক্ত ডিলারের মাধ্যমে এসব বীজ প্রত্যেক উপজেলার কৃষকরা দ্রুত তম সময়ে পাওয়ারন জন্য হাট-বাজারে এরই মধ্যে পৌঁছানোর কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে।

গতকাল কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ খামার বাড়ি, চাঁদপুরের বীজ সরবরাহ কেন্দ্রের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. খায়রুল বাশার, এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন। প্রাপ্ত তথ্য মতে, প্রত্যেক উপজেলার হাট-বাজারের অনুমোদিত ডিলারগণ এ বীজ কৃষকদের নিকট বিক্রি করবে বলে চাঁদপুর বীজ বিতরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে। বিত্রডিসির চাঁদপুর জেলা বীজ সরবরাহ কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক জানান, চাঁদপুরে বরাদ্দকৃত বীজ এরই মধ্যে সব ডিলারদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সব ডিলারদের নিকট এ বীজ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। প্রতিটি প্যাকেটে নির্ধারিত মূল্য সংযোজন করা আছে। এদিকে বন্যাত্তোর পুনর্বাসন কল্পে ও উৎপাদনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত জেলার সব উপজেলার ১৫ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দিচ্ছে।

চলমান রোপা আমন চাষাবাদের জন্যে ১০ হাজার করে প্রত্যেক উপজেলার তালিকাভুক্ত কৃষককে ৫ কেজি করে বীজ ধান, ১০ কেজি করে ডিএফপি সার, ১০ কেজি করে এমওপি সার, ও নগদ ১ হাজার টাকা করে বিকাশে প্রদানের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর, খামার বাড়ি চাঁদপুর, সংশ্লিষ্ট কৃষিবিদ মো. মোবারক হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি আরো জানান, বসতবাড়িতে উঁচু স্থানে শাক-সবজি চাষাবাদে ৫ হাজার কৃষককে বিভিন্ন উন্নত জাতের শাক-সবজির বীজও প্রণোদনা হিসেবে দেয়া হবে। উপজেলা কমিটি কর্তৃক বাছাইকৃত কৃষকগণ এ সুবিধা পাবেন। এবারের বন্যায় চাঁদপুর জেলায় ৪৭ হাজার ৬৮৪ জন কৃষক কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় বলে সরকারিভাবে জানা গেছে। কৃষিবিদ মো. মোবারক হোসেন জানান, কৃষকদের কথা ভেবে কৃষিবিভাগ প্রাথমিক ভাবে এ উদ্যোগ প্রহণ করেছেন । প্রসঙ্গত, ২৫ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত চাঁদপুর জেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবি। ধান, গম, আলু, সরিষা পাট, সয়াবিন, আখ, অভিন্ন শাক-সবজি চাঁদপুর জেলার প্রধান ফসল। কৃষি পরিবেশ অঞ্চল ১০,১৬,১৭,১৯ এর আওতাভুক্ত। জেলার বর্তমান ফসলের নিবিরত ১৯১%। চাঁদপুর সেচ প্রকল্প ও মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প নামে দুটি প্রকল্প জেলার ৪ উপজেলা সদর, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর, হাইমচরে ২৩ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমি রয়েছে। জেলায় ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৪৮৯টি কৃষি পরিবার রয়েছে। জেলার খাদ্যের প্রয়োজন গড়ে ৪ লাখ ১২ হাজার মে.টন। বিগত দিনে খাদ্য ঘাটতি ছিল। উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি চালুকরণ ও আধুনিকতার আবাদের মাধ্যমে বর্তমানে খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে ৪ লাখ মে. টন। খাদ্য উৎপাদনে সরকার বিদ্যুৎ ও সার ভতুর্কি এবং ব্যাংকগুলো সহজ শর্তে কৃষিঋণ বিতরণ করে যাচ্ছে। গবেষণালব্ধ জ্ঞান ও কৃষকের উদ্ভাবিত নিজস্ব উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সীমিত সম্পদ কাজে লাগিয়ে ও বিশেষ বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণের ফলে কৃষকের আর্থিক দৈন্যতা ক্রমান্বয়ে দূর হচ্ছে। জেলার সব কৃষিকর্মীরা বিশেষ কার্যক্রমকে স্বাভাবিত কর্মের পাশাপাশি আবশ্যক পালনীয় কর্তব্য হিসেবে গ্রহণ করেছে।