আঙুরের বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে চাঁদপুরে
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
শওকত আলী, চাঁদপুর
এই প্রথমবারই চাঁদপুরের পল্লীর মাটি আঙুর চাষের জন্য উপযোগী ও চাষযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে ফলনের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ওই উদ্যোক্তা ২০ শতক জমিতে আঙুর চাষাবাদ শুরু করেছেন এবং ফলনও পাচ্ছেন।
চাঁদপুর শহরতলীর নিকটেই কল্যাণপুর ইউনিয়নে কালিভাংতি নামকস্থানে আঙুর চাষ করে বাণিজ্যিক ভাবে সফলতা অর্জন করতে পেয়েছেন কামরুজ্জামান প্রধানিয়া ।
সদর উপজেলার চাঁদপুর-মতলব সড়কের পাশেই দেখা মিলছে ভিনদেশি এই রসালো ফল। থোকায় থোকায় ঝুলছে এ আঙুর ফল। খেতের বাঁশের মাচায় ঝুলে থাকা সবুজ আঙুর দূর থেকে পথচারীদের নজর কাড়ছে এবং মনের মধ্যেও আনন্দ দিচ্ছে।
উদ্যোক্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান প্রধানিয়া বলেন, ২০২১ সালে করোনা কমতে শুরু করলে আঙুর চাষ নিয়ে কাজ শুরু করি। আমার প্রজেক্টটি ছয় মাস আগে শুরু করেছি। প্রথমে ছাদ বাগান থেকে কিছু জাত নিয়ে চাষ শুরু করি। ২০২৩ সাল থেকে ফলনে বেশ ভালো ফলাফল পাই।
এই উদ্যোক্তা আরো বলেন, বাগানে ৪৪টি জাতের মধ্যে ১২০টি মাতৃগাছে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। কিছু গাছে ফল শোভা পাচ্ছে। এখানে ছয় মাস ধরে পরিচর্যা করা হচ্ছে। এতে আমার প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। গ্রিন লং, একেলো, বাইকো নুর, লোরাস, ভেলেজ, ডিকসন, সুপার নোভা, নারু সিডলেস জাতের আঙুর চাষ করা হচ্ছে আমার এ বাগানে।
দর্শনার্থী তানভীর হোসেন ও আমির হোসেন সরকার বলেন, চাঁদপুরে আঙুরের বড় বাগান আর কোথায়ও নেই। তাই বাগানটি দেখতে এসেছি। আমরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছি, যাতে বাগান করতে পারি। যদিও আমরা আঙিনা এবং ছাদে চারা রোপণ করে সফলতা পাইনি।
এখানকার দৃশ্য দেখে আবারো উৎসাহ পাচ্ছি। তার কাছ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ এবং আঙুরের চারা নিচ্ছি। কল্যাণপুর ও আশিকাটি ইউনিয়নের কৃষি কর্মকর্তা আনিসুল ইসলাম ও সাদিকা বেগম বলেন, দোআঁশযুক্ত লালমাটি, জৈব সার সমৃদ্ধ কাঁকর জাতীয় মাটি এবং পাহাড়ের পাললিক মাটিতে আঙুর চাষ ভালো হয়। জমি অবশ্যই উঁচু হতে হবে। যেখানে পানি দাঁড়িয়ে থাকবে না। প্রচুর সূর্যের আলো পড়বে এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে। আমাদের পক্ষ থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাফায়েত আহম্মদ সিদ্দিকী বলেন, চাঁদপুরে আগে আঙুর চাষ হতো না। যেগুলো হতো, তা পরীক্ষামূলক। এবার জেলায় প্রথমবারের মতো মিষ্টি আঙুর চাষ শুরু করেছেন মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
তার আঙুর চাষের বিষয়টি আমরা অবগত আছি। এ আঙুর চাষের ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষ থেকে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সকল ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি। আমরা চাই এ আঙুর চাষে মোহাম্মদ কামরুজ্জামান সফল হওয়ার পথে। তাকে দেখে আরো নতুন-নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হউক এটা আমাদের সকলের প্রতি প্রত্যাশা।