ঢাকা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দুর্গাকে বর্ণিলভাবে সাজাতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

দুর্গাকে বর্ণিলভাবে সাজাতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

দরজায় কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। শরতের কাশফুল জানান দিচ্ছে দেবীর আগমনী বার্তা। তাই তো দেবীবন্দনার প্রস্তুতির দেখা মিলছে গাইবান্ধার মন্দির-মণ্ডপগুলোয়। দুর্গাকে বর্ণিল সাজে সাজাতে নিজেদের হাতের কারু কাজ দেখাতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা। অন্যান্য সময় তেমন কাজ না থাকলেও এই উৎসবকে ঘিরে দম ফেলানোর যেনো ফুসরত নেই তাদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, গাইবান্ধা শহরের বড় কালিবাড়ি মন্দির, শনি মন্দির, ব্রিজরোড কালিবাড়ির দুর্গা মন্দির, কালি মন্দির, ডেভিড কোম্পানি পাড়া দুর্গা মন্দির, মধ্যপাড়াসহ বেশ কয়েকটি পূজামণ্ডপ। এখানে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। কোথাও আবার কাজ শেষে শুকানো হচ্ছে প্রতিমাগুলো। এর মধ্যে গাইবান্ধা পৌরসভার শনি মন্দিরে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরি করছেন মালাকার বাদল চন্দ্র বিশ্বাস ও ববিতা রানী দম্পতি। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় এই কাজ করছেন তারা।

ব্রিজরোড কালিবাড়ির মন্দিরেও কাজ করছেন স্থানীয় মালাকাররা। তবে, অন্য মন্দিরগুলোতে দেখা যায়- ভিন্ন চিত্র। বড় কালিবাড়ি মন্দিরের দেবী প্রতিমা তৈরি করেছেন টাঙ্গাইল থেকে আগত মৃৎশিল্পীরা। যাদের পারিশ্রমিক দেয়া হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। মধ্যপাড়া পূজা-পেও দেখা মেলে- লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের মালাকার বিশ্বজিৎ রায় ও তার সঙ্গীদের। যাদের পারিশ্রমিক ১ লাখ টাকা। এসব মৃৎশিল্পী শুধু গাইবান্ধা নয়, এই মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘরে শৈল্পিক নৈপুণ্যে সাজান দেবী দুর্গাকে।

অন্যদিকে, জেলার কিছু স্থানীয় মালাকার রয়েছেন যারা বিভিন্ন স্থান থেকে অর্ডার নিয়ে তৈরি করেন এসব প্রতিমা। বছরের অন্য সময়গুলোতে তেমন কোনো কাজ না থাকলেও, এই সময়ে নিজেদের হাতের কারুকাজ দেখাতে ব্যস্ত থাকেন তারা। এদিকে, চলমান এ প্রতিমার কাজ দেখতে সকাল-বিকাল ভিড় করেন শিশু, বয়স্কসহ সব বয়সী মানুষ। আবারো অনেকে আসেন অর্ডার দেয়া প্রতিমা পর্যবেক্ষণে। আগামী ২ অক্টোবর মহালয়ার মাধ্যমে লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশকে সঙ্গে নিয়ে দোলায় চড়ে ধরণীতে আগমন ঘটবে দেবী দুর্গার। ফলে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে গাইবান্ধার সর্বত্র। প্রতিমা তৈরির সাথে সাথে আনুষঙ্গিক সব প্রস্তুতি নিতেও দেখা যায় বিভিন্ন মন্দিরের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরুহিতদের। বাংলাদেশ হিন্দুবৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি রণজিত বকসি সূর্য জানান, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখাসহ সবধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবক দলসহ স্থানীয় জনগণ। প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে দিন-রাত পাহারা দিচ্ছেন তারা। আগামী মাসের প্রথমের দিকেই প্রতিমা রঙ করা হবে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) বিমল চন্দ্র সরকার বলেন, এ পর্যন্ত জেলায় ৫৬১ পূজামণ্ডপের তথ্য পাওয়া গেছে। আগামী ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। আর এ বছর ১২ অক্টোবর নবমী এবং একই দিনে বিজয়া দশমী পূজার মাধ্যমে শত শত ভক্ত-অনুরাগীকে কাঁদিয়ে স্বামীর ঘর কৈলাসে পাড়ি জমাবেন মহাশক্তির দেবী দুর্গা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত