টাঙ্গাইলের বাসাইল বিলে শতশত একর জমিতে ফুটে থাকা লাল শাপলা মন কাড়ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের। পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকার এই বিল তাই খ্যাতি পাচ্ছে লাল শাপলার বিল নামে।
রোদের তাপে নুইয়ে পড়ে বলে ভোরের সূর্য উঠার আগেই লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন নানা প্রান্তের প্রকৃতিপ্রেমীরা। সঙ্গে বাড়তি আকর্ষণ বিলের পাড়ে বিচ্ছিন্ন ভাবে ডানা মেলা কাঁশফুল।
ফুটে থাকা কাঁশফুল জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষা শেষে শরৎ এর আগমণী বার্তা। তবুও বর্ষার স্নিগ্ধতার রেশ এখনো রযেছে প্রকৃতির খাল-বিলের থৈ থৈ জলে ফুটে থাকা শাপলা ফুলে। তেমনই এক শরতের সকালে শুভ্র নীল আকাশ আর জমিনের হালকা কুয়াশার চাদরে মোড়া ধরণীতে সবেমাত্র উকি দিচ্ছে কুসুম সূর্য। সেই সূর্য শাপলার সবুজ পাতা আর লাল পাপড়িতে জমে থাকা শিশিরে ধরা দিয়েছে চকচকে মুক্তা হয়ে। সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিভিন্ন স্থান থেকে বিলের ধারে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোরে দূর দূরান্ত থেকে শত শত প্রকৃতি প্রেমীরা ফুটে থাকা লাল শাপলার সৌন্দর্য দেখতে ছুটে আসছেন বাসাইল পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকার এই বিলে। রোদের তাপে নুইয়ে পড়ে বলে ভোরের আলো ফুটতেই লাল শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসছেন নানা বয়সী নারী-পুরুষ। কেউ কেউ কাঁদা মারিয়ে শাপলা তুলে খোপায় গুঁজছেন, আবার কেউ শাপলা হাতে ছবি তুলছেন। এ যেন লাল শাপলা ফুলের মেলা।
কেবল সৌন্দর্য উপভোগই নয় এই লাল শাপলা হয়ে উঠেছে প্রান্তিক মানুষের জীবিকার উৎসও। এখান থেকে প্রতিদিন আহরণ করা হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার শালুক। তবে বিলে নৌকা না থাকায় নানা ভোগান্তি পোহাতে হয় দর্শনার্থীদের। দর্শনার্থী তানিয়া আক্তার জানান, তিনি সখীপুর থেকে এখানে লাল শাপলা দেখতে এসেছেন দেখে অনেক ভালো লাগছে তার। তবে বিলে নৌকা না থাকায় আমাদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়।
কাঁদা মাটি পাড়িয়ে বিলে যেতে হয়। শিক্ষার্থী অনামিকা রিতু জানান, তিনি এখানে প্রথম এসেছেন। বিলের শাপলা দেখে তিনি মুগ্ধ হয়ে গেছেন। বিলের মাঝখানে যাতায়াতের ব্যবস্থা ভালো হলে আরো দর্শনার্থীরা আসত। ঘুরতে আসা শিমু আক্তার জানান, আগে এখানে মানুষ আসত না। এখন লাল শাপলা দেখে অনেক মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে এসেছে। বিনোদনের একটা জায়গা হয়েছে। সবাই তাদের ইচ্ছে মতো ছবি তুলছে।
কলেজছাত্রী ফাহিমা খাতুন জানান, এত লাল শাপলা তিনি কখনো দেখেন নাই। তিনি বান্ধবীদের সাথে এসেছেন। হাজার হাজার লাল শাপলা ফুল ফুটেছে। প্রকৃতি যেন অন্যরকম সাজে সেজেছে। দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে। কাঁদা পাড়িয়ে ছবি তুলতে যেতে হয়। এখানে যদি নৌকার ব্যবস্থা থাকত তাহলে আরো দর্শনার্থীদের ভিড় হত।
ঘুরতে আসা সাব্বির হোসেন জানান, বউকে সাথে নিয়ে লাল শাপলা দেখতে এসেছেন। অনেক দিন ধরে ইচ্ছে ছিল লাল শাপলার সঙ্গে ছবি তুলবো আজ ইচ্ছেটাকে পূর্ণতা দিলাম। ভোর বেলায় লাল শাপলা গুলো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকে দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। লাল শাপলার রাজত্ব মনকে প্রফুল্ল করে তুলেছে।