দেশের অন্যতম কঠিন শিলা খনি মধ্যপাড়ার পাথর বিক্রি আশংকাজনক কমে যাওয়ায় ইয়ার্ডে বিপুল মজুদ। স্থান সংকুলান না হওয়ায় বন্ধ হতে পারে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম।
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলায় অবস্থিত দেশের অন্যতম মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি। পাথর উত্তোলন বাড়লেও বিক্রি কমে যাওয়ায় জায়গার সংকুলান না হওয়ার কারণে নুতন করে পাথর উঠানোর কার্যক্রম বন্ধ হতে পারে. খনির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায় যে, বর্তমানে খনির ৯ইয়ার্ডে প্রায় ১০ লাখ টন পাথর মজুদ আছে। এর মধ্যে রেলপথে ব্যবহারের ৫ লাখ ৭০ হাজার টন ব্লাস্ট পাথর এবং নদী শাসনের জন্য ২ লাখ ৮০ হাজার বোল্ডার পাথর মজুদ আছে।
বর্তমানে খনি থেকে ৫ সাইজের পাথর তোলা হসছে ৫-২০মিমি. ২০-৪০মিমি. ৪০-৬০মিমি. ৬০-৮০মিমি এবং বোল্ডার সাইজ।
দেশে বার্ষিক পাথরের চাহিদা প্রায় ২ কোটি ১৬ লাখ টন হলেও বেশিরভাগ পাথর আমদানি করা হয় ভারত ও ভুটান থেকে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও মূল্য কম হওয়া সত্ত্বেও পাথর ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মধ্যপাড়ার পাথর ব্যবহার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন না। সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য মধ্যপাড়ার পাথর ব্যবহার করার নির্দেশনা থাকলেও তা যথাযথভাবে অনুসরণ না করার অভিযোগ রয়েছে।
খনির একাধিক কর্মকর্তারা বলেন, পাথর আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক বৃদ্ধি এবং দেশীয় পাথরের টেরীফ ভেয়লু বাড়ানো প্রয়োজন। এরফলে পাথর বিক্রি করতে সুবিধা হওয়ার পাশাপাশি দেশের একমাত্র পাথর খনিকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের একাধিক ডিলার বলেন, হিলি বন্দর দিয়ে ভারতীয় পাথর আসছে। ফলে ব্যবসায়ীরা মধ্যপাড়ার পাথর না কিনে ভারতের আমদানিকৃত পাথর কিনছেন। এরফলে পাথর বিক্রি আশংকাজনক হারে কমে গেছে। ২০১৪সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ বছরের জন্য পাথর উত্তোলন ও খনি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয় বেলারুশের জেএসসি ট্রেস্ট ও দেশীয় একমাত্র মাইনিগ কাজে অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কোনসরটিয়াম জিটিসি কে। খনির পাথর তোলার কাজে নিয়োজিত আছেন ইরোপিয়ান দক্ষ প্রকোসলী এবং সুদক্ষ শ্রমিক।
পূর্ণ মাত্রায় উৎপাদন করা সম্ভব হওয়ায় ২০১৮-২০১৯অর্থ বছরে ৪ দফা মুনাফা করা হয়। জেটিসির সঙ্গে প্রথম দফা চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর। দ্বিতীয় দফা চুক্তি অনুযায়ী ২০২১সালের সেপ্টেম্বর হতে পাথর উত্তোলনের কাজ অবেহেতো রেখেছে জেটিসি।
২০০৭সালের ২৫ মে মাস থেকে উৎপাদন শুরু হয় দেশের একমাত্র মধ্যপাড়ার কঠিন শিলা খনি। পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২০১৩ সালের জুন থেকে টানা ৬ বছর খনির লোকসানের পরিমান প্রায় শত কোটি টাকা। তবে লোকসান কাটিয়ে এখন লাভের মুখ দেখছে খনি কর্তৃপক্ষ। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন আমদানি করা পাথরের চাইতে আমাদের পাথরের গুণগত মান অনেক উন্নত। উত্তোলন বাড়লেও বিক্রি কমে গেছে। গত ২ বছরের মধ্যে চলতি সালের সেপ্টেম্বর মাসে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৮ হাজার ৪০৭ টন পাথর বিক্রি হয়েছে বলে এমডি জানান।