ড্রপ তারের সংকটে সংযোগ বিঘ্নিত
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতাধীন দাশুড়িয়া জোনাল অফিসে ড্রপতার সংকটে বিঘ্নিত হচ্ছে নতুন গ্রাহকদের মিটার বিতরণ ও সংযোগ প্রদান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দাশুড়িয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. কামাল হোসেন। ডিজিএম কামাল হোসেন জানান, পল্লীবিদ্যুতের ক্রয়কৃত ড্রপতার (পুল থেকে মিটার সংযোগ দেয়া তার) শেষ হয়ে গেছে। যেহেতু এই তারটি নতুন গ্রাহকদের সংযোগ স্থাপনের জন্য প্রয়োজন হয় সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক গত ১৮ আগস্ট গ্রাহকদের সুবিধার্থে একটি সার্কুলার প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত সেই সার্কুলারে বলা হয়েছে, নতুন সংযোগ প্রদানের সময় পল্লী বিদ্যুৎ অফিস যে মানের ড্রপতার গ্রাহক পর্যায়ে প্রদান করে থাকে অনুরুপ মানের ড্রপতার গ্রাহকদের খোলা বাজার থেকে ক্রয় করে মিটারে সংযোগ নিতে পারবেন। তবে খোলা বাজার থেকে ক্রয়কৃত ড্রপতারের বাজার মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে ৪০.৮৫ টাকা মিটার। যা পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের পরবর্তী মাসের ব্যবহৃত বিদ্যুৎ বিলের সাথে সমন্বয় বাবাদ পরিশোধ করবে। নতুন মিটারের আবেদন করে মিটার না পেয়ে বারবার দাশুড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের দ্বারস্থ হওয়া শাহীন আলী বলেন, আমি মিটারের জন্য আবেদন করেছি। বাড়িতে ওয়্যারিং ও শেষ। কিন্তু ড্রপতার শেষ বলে আমার মিটার দিচ্ছে না অফিসের লোকজন। আমি গত কয়েকদিন ধরে এই অফিসে ঘুরছি। এখন আমাকে বলছে বাইরে থেকে ড্রপতার কিনতে। কিন্তু আমি খোলা বাজারে খবর নিয়ে দেখেছি প্রতিমিটার ড্রপতারের মূল্য ৫৪/৫৫ টাক। যেখানে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে প্রতি মিটার তারের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে ৪০.৮৫ টাকা। তাহলে প্রতি মিটারে আমাদের (গ্রাহকদের) লোকসান গুনতে হবে ১৪/১৫ টাকা। পল্লী বিদ্যুতের ১৩০ মিটারের সংযোগ নিতে গ্রাহকদের প্রায় ১৯০০/১৯৫০ টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে।
পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে মাসে গড়ে প্রায় ৩০০ আবেদন পড়ত নতুন মিটারের। কিন্তু কেন্দ্রীয় পণ্যাগারে ড্রপতার সংকটের কারনে বর্তমানে সেই আবেদনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০/৬০ টিতে। কেননা অনেকেই আছে যাদের পক্ষে প্রয়োজনের বেশি টাকা খরচের সার্থ নেই। আবার অনেকেই অতীব প্রয়োজন ছাড়া নতুন সংযোগের জন্য আবেদন করছে না। কারণ সবাই চাইছে ভোগান্তি আর বাড়তি খরচ মুক্ত থাকতে।
তবে শাহীনদের মতো অনেক গ্রাহকই আছে যাদের সংযোগের ভীষণ প্রয়োজন থাকার পরও কেবল বাড়তি খরচ আর ভোগান্তির কথা চিন্তা করে তারা চুপ রয়েছেন।
দাশুড়িয়া জোনাল অফিসের ডিজিএম কামাল হোসেন জানান, কেন্দ্রীয় পণ্যাগারে ড্রপতারের সংকটের কারণেই মূলত এই সমস্যাটি তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনটাও প্রতিটি সেক্টরের উপর একটি বিরুপ প্রভাব ফেলেছে। তবে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ ড্রপতারের এই সমস্যা সমাধান হতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের দেয়া মূল্য থেকে খোলা বাজারে ড্রপতারের মূল্যের ব্যবধান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বোর্ডের সিদ্ধান্তের বাইরে তো আমি কিছু বলার অধিকার রাখি না। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড আমাদের যে দিকনির্দেশনা দেবে আমরা সেটাই কেবল গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছে দেই। এর বাইরে আর কিছুই না।