ঢাকা ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জলাবদ্ধ শতাধিক গ্রাম

প্রকল্প বাস্তবায়ন দাবি
জলাবদ্ধ শতাধিক গ্রাম

যশোরের কেশবপুর পৌর শহরসহ হরি, ঘ্যাঁংরাইল অববাহিকার ১০৪ গ্রাম প্রায় দেড়মাস ধরে জলাবদ্ধ। পানি নিষ্কাশনের প্রধান পথ বুড়িভদ্রা, হরিহর ও আপারভদ্রা নদী পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। প্লাবনভূমির সঙ্গে নদীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় জোয়ার-ভাটাবাহী এসব নদী এখন মৃত প্রায়। নদী রক্ষায় এমুহূর্তে হরি, ঘ্যাঁংরাইল নদী খননসহ সব নদ-নদী অববাহিকায় টিআরএম প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি।

জানা গেছে, উপজেলার ৯ ইউনিয়নের পানি নিস্কাশনের প্রধান নদী হরি। যা হরিহর, বুড়িভদ্রা ও আপারভদ্রা নদীর কাশিমপুর পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার। হরি নদীর পানি শাখা নদী দেলুটি দিয়ে শিবশা নদী হয়ে সাগরে পতিত হয়। বলধালি, গরালিয়া, বুড়ুলি, পাথরা, টিপনে, চটচটিয়া, রতনখালি, সুন্দর মহল, ফুলবাড়ি, বাগআঁচড়া বিলসহ মোট ৯১টি স্লুইচ গেট দেয়া হয়।

এ ছাড়া, খুকশিয়া ৮ ভেন্টে স্লুইচ গেটের সঙ্গে ছোট বড় ২৭টি বিল, নরনিয়া ৪ ভেন্টের সঙ্গে ১০-১২টি বিল, ভবদহের ২১ ও ৯ ভেন্টের সাথে ছোট বড় ৫২টি বিল ও কোনো কোনো রেগুলেটরের সঙ্গে একাধিক বিল যুক্ত আছে। যা পোল্ডারে আবদ্ধ থাকায় পানি নিষ্কাশন বাধগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমান এসব স্লুইচ গেটের দু’পাশ পলিতে ভরাট হয়ে অকেজো হয়ে গেছে। পাউবোর পোল্ডার ব্যবস্থার প্রভাবে প্লাবন ভূমির সঙ্গে নদীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বর্তমানে হরি নদীতে জোয়ার না উঠায় কোন গেট দিয়ে পানি নদীতে পতিত হয় না।

জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০১৮ সালে ৩ বছর মেয়াদে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এ তিন নদীসহ সংযোগ খাল খনন করা হলেও ভরাট হয়ে গেছে। ফলে সরকারের ৫০ কোটি টাকাই গচ্চা গেছে। এ ছাড়া, প্রতি শুষ্ক মৌসুমে পলির হাত থেকে নদী রক্ষায় হরি নদীর সংযোগস্থল আপারভদ্রার মুখে গত বছর সাময়িক ক্রসবাঁধ দেয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদারের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে হরি নদীর স্রোতের মুখে মাঝ পথে বাঁধ ধসে যায়।

মধ্যকুল এলাকার কামরুজ্জামান জানান, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় চলতি বর্ষা মৌসুমে তাদের তিন দফা বন্যার কবলে পড়তে হয়েছে।

বড়েঙ্গা গ্রামের সুকুমার বিশ্বাস বলেন, সময়মতো অর্থ বরাদ্দ না মেলায় বিলম্বে বাঁধ দেয়া হয়। ফলে পলিতে নদী ভরাট হয়ে যায়। হরি, ঘ্যাঁংরাইল নদী খননসহ জরুরি ভিত্তিতে সব নদ-নদী উন্মুক্ত করে টিআরএম বাস্তবায়ন জরুরি বলে তিনি দাবি করেন।

হরি-ঘ্যাঁংরাইল অববাহিকার জলাবদ্ধতা নিরসন কমিটির সভাপতি মহির উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ১৯৬০ সালের পূর্বে গোনে-বেগোনে প্রায় ১৫ থেকে ২০ কোটি ঘন মিটার পানি সঞ্চালিত হতো। পোল্ডার ব্যবস্থার পরে তা কমে দাঁড়ায় ২ থেকে আড়াই কোটি ঘন মিটারে।

পলির পরিমাণ ঠিক থাকলেও পানির সঞ্চালন কমে যাওয়ায় জোয়ারের প্রান্ত ভাগ থেকে পলি জমতে থাকে। এ অঞ্চলে ১৯৮৪ সালের পর থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডজন খানেক নানাবিধ প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও একমাত্র টিআরএম প্রকল্প ছাড়া আর কোনো প্রকল্পই নদীর নাব্য সৃষ্টি বা ধরে রাখতে পারেনি।

কেশবপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার বলেন, জরুরি ভিত্তিতে পানি নিষ্কাশনের জন্যে হরিহর ও আপারভদ্রা নদীতে তিনটি ভাসমান খননযন্ত্র নামানো হয়েছে। দুটি খননযন্ত্র দিয়ে আপারভদ্রা নদীর পলি অপসারণে কাজ চলছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত