যমুনা নদীর তীরবর্তী সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সঙ্গে জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি চরাঞ্চলবাসীর। নদী দিয়ে বিভক্ত হওয়ায় স্থল যোগাযোগের এ দাবি বাস্তবায়িত হলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের যাতায়াত সহজ হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশের ৩২তম নদীবন্দর হিসেবে কাজিপুরের মেঘাই-নাটুয়ারপাড়া রুটে কাজ শুরুর মাধ্যমে এ সম্ভাবনা জেগে উঠেছে। এরই মধ্যে নদীর উভয় পাড়ে বিআইডব্লিউটিএ এর পল্টুন দিয়ে বন্দরের কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য অফিস ও অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে মেঘাই ঘাট এলাকায়। চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়া থেকে মেঘাই ঘাট পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে প্রতিদিন। যমুনায় ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত থেকে মুক্তি পেতে মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সড়ক পথে যোগাযোগের দাবি তুলেছে।
ভূক্তভোগীরা বলছেন, যমুনার বুকে ছোট বড় চর জেগে ওঠায় আবাদী জমি তৈরি হয়েছে। এ জন্য স্থলযোগাযোগের স্বপ্ন পূরণের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। নদীর স্রোতধারাও এখন অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে যমুনার এ অঞ্চলে পানি থাকে প্রায় পৌনে ৪ কিলোমিটার এলাকায়। তারা আরো বলেন, ঢাকা থেকে সরিষাবাড়ী উপজেলা হয়ে কাজিপুরের মনসুরনগর ইউনিয়ন পর্যন্ত রয়েছে পাকা সড়ক। মনসুরনগর থেকে এখন চরগিরিশ ইউনিয়ন হয়ে যমুনার ছোট একটি শাখা পাড় হলেই চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়ার সাথে স্থলপথে যোগাযোগ করা সম্ভব এবং নাটুয়ারপাড়া থেকে নদীবন্দরের সুবিধায় মেঘাই ঘাটের যোগাযোগও সম্ভব হবে। সেই সাথে মেঘাই থেকে বগুড়ার ধুনট-শেরপুর উপজেলা হয়ে মহাসড়কের সাথে যোগাযোগ সৃষ্টি হবে এবং চরগিরিশ ইউনিয়নের ভেটুয়া ঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণ করলেই এ যোগাযোগের পথ সুগম হবে। এ ঘাট এলাকা দিয়ে জামালপুর থেকে চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে এরই মধ্যে। সড়কের দুইপাশে জেগে ওঠা চরে শিল্প কারখানা স্থাপনও সম্ভব হবে। এতে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবিকায় পরিবর্তন ঘটবে। এ বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির প্রধান কাজিপুরের সন্তান প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, নাটুয়ারপাড়ার সাথে সরিষাবাড়ী পর্যন্ত সড়কপথে একটি ব্রিজের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপিত হলে এলাকায় শিল্প কারখানা স্থাপন করা সম্ভব হবে। শিল্পপতি সাখাওয়াত হোসেন ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ বকুল সরকার জানান, জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার সাথে নাটুয়ারপাড়া পর্যন্ত সড়ক পথে যোগাযোগের দাবি এখন সময়োপযোগী। এ দাবি বাস্তবায়িত হলে মানুষের ভাগ্যয়োন্নয়নসহ শিল্পকারখানা স্থাপনে জীবন মান পাল্টে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।