সেতুর কাজ বন্ধ রেখে লাপাত্তা ঠিকাদার

প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ভোলা প্রতিনিধি

ভোলার বোরহানউদ্দিনে দুটি সেতু নির্মাণের পর সংযোগ সড়ক ও ওয়াল না করেই পালিয়েছে ঠিকাদার। গত দুই বছরের বেশি সময় কাজ ফেলে রাখায় বন্ধ হয়ে গেছে দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যোগাযোগ মাধ্যম। উপজেলা সদর ও হাটবাজারে ঘুরে যেতে হয় কয়েক কিলোমিটার পথ। এতে স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। জানা গেছে, মুন্সিরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন আরসিসি সেতুর কাজ শেষ হয় দুই বছর আগে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করে উল্টো রাস্তার মাটি কেটে প্রায় ১০ ফুট গভীর করে রেখেছে। সামান্য বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি এলেই কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায় সংলগ্ন এলাকা। বোরহানউদ্দিন এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের সেতু নির্মাণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালে ৩ মে মুন্সিরহাট সড়কে জোড়া সেতু নির্মাণ শুরু হয়। ৩ কোটি ৭২ লাখ টাকায় সেতু দুটির কার্যাদেশ পায় ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্স। প্রথম সেতুর দৈর্ঘ্য ১৫ মিটার ও প্রস্থে সাড়ে ৫ মিটার এবং দ্বিতীয় সেতুটির দৈর্ঘ্যে ২২ মিটার ও প্রস্থে সাড়ে ৫ মিটার। এ ছাড়া ১৬৫ মিটার সংযোগ সড়ক ও গাইডওয়াল নির্মাণের কথা ঠিকাদারের। ২০২১ সালের মে মাসে কাজ শেষ করে সড়কটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে সেতুর কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক ও গাইডওয়াল নির্মাণ না করে ফেলে রাখা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে টুয়েল নামে এক ব্যক্তি নির্মাণ কাজ দেখা শোনা করতেন। কাজের বিষয়ে কিছু বললেই তিনি আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনিও পলাতক। স্থানীয়রা জানান, অসমাপ্ত ওই দুই সেতু দিয়ে প্রতিদিন টবগী ও হাসাননগর ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষের চলাচল। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও সেতুর কাজ শেষ হয়নি। উল্টো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুর দুই পাশের চারটি সংযোগ সড়কে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ৮ থেকে ১০ ফুট গর্ত করে রেখেছে। সামান্য বৃষ্টি হলে বা জোয়ারের পানিতে সেখানে কোমরপানি জমে। যানবাহন দূরের কথা মানুষের চলাচল করতে পারে না পথ দিয়ে। মুন্সিরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে এ সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এলাকাবাসীর সুবিধার জন্য সেতু দুটি নির্মাণ হয়েছিল। এখন এই সেতুই তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্সের পক্ষে টুয়েলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। বোরহানউদ্দিন উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাইদুল ইসলাম খান ভোগান্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদার যেটুকু কাজ করেছেন, সেটুকুর বিল দেয়া হয়েছে। অসমাপ্ত কাজের বিল দেয়া হয়নি। এ ছাড়া কাজ শেষ না করায় ঠিকাদারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। সেতু দুটির দ্রুত সংযোগ কাজ শেষ করে সড়কে চলাচল স্বাভাবিক করার দাবি জানান স্থানীয়রা।