টানা ভারীবর্ষণেই টাঙ্গাইলের মধুপুরের বড়বাইদ এতিমখানার ৬০ বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে। এতে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। এ ৬০ বিঘা জমির ফসল এতিমখানার এতিমদের বড় একটি আয়ের উৎস বলে জানান এতিমখানা কর্তৃপক্ষ।
সরজমিনে দেখা যায়, কয়েক দিন ধরে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বড়বাইদ এতিমখানার ৬০ বিঘা জমিতে অপরিপক্ব বোরো ধান তলিয়ে গেছে। কোথাও ধানের গলা পানি আবার কোথাও ধানের শীষ বের করে উঁকি দিচ্ছে। এতিমখানার চারপাশে নিচু জায়গাতে ধানের চাষ। কয়েকদিন আগেও বাতাসে দোল খাচ্ছিল এসব কাঁচা ধানের শীষ। হঠাৎ ভারি বৃষ্টিপাতে এতিমখানার স্বপ্নে লালিত সেই ধান এখন ঝুঁকিতে রয়েছে।
বড়বাইদ জামিয়া ইসলামিয়া সৈয়দ আহমদিয়া এতিমখানা ও মাদ্রাসার মুফতি আল আমীন জানান, ধানের জমি কিছুটা নিচু হওয়ায় ৬০ বিঘা ধানের বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের।
তিনি আরো জানান, ভারী বৃষ্টিপাতে জমির সব ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে তার প্রতিষ্ঠান বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।
বড়বাইদ জামিয়া ইসলামিয়া সৈয়দ আহমদিয়া এতিমখানা ও মাদ্রাসার সহকাাউ পরিচালক মুফতি ইব্রাহিম ত্বকী জানান, এবার যেভাবে ধানের ফলন দেখা যাচ্ছিল, তাতে আমাদের মন আনন্দে ভরে গিয়েছিল। তবে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে এবং পানি বাড়ছে তাতে ধান ঘরে তুলতে পারব না, এই বড়বাইদ এতিমখানায় প্রায় ৩৫০ জনের খানা এই ধানের উপর নির্ভরশীল।
বড়বাইদ জামিয়া ইসলামিয়া সৈয়দ আহমদিয়া এতিমখানা ও মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মো. ইমান আলী জানান, তারা ৬০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ধান চাষ করেন। তবে টানা বৃষ্টির কারণে তাদের বড়বাইদ এতিমখানার ধানক্ষেত তলিয়ে গেছে। আর ২ থেকে ৩ মাস যদি পানি জমে থাকে তাহলে সব ধান পচে নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়াও অপরিপক্ব ধান ডুবে যাওয়ায় চিন্তিত এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। কেননা, এতিমের একমাত্র ভরসা এই ৬০ বিঘার ফসল। টানা বৃষ্টিপাতে যেন থামিয়ে দিতে পারে এতিমখানার এতিমদের জীবিকা।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকুরা নাম্নী বলেন, মধুপর একটি পাহাড়ি অঞ্চল। এই অঞ্চলে কিছুটা বিল রয়েছে। সেই বিলের তীরবর্তী জায়গায় এতিমখানার কৃষিজমি। যে জমিতে এখন ধানের গলা পান সেই পানি শুকাতে প্রায় তিন মাস লেগে যায়। এ সময় ধানের গোড়া পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মধুপুরে এতিমখানাটার সুনাম রয়েছে। সেখানে অনেক ছাত্র রয়েছে। এই এতিমখানার জন্য সমাজসেবা কিছুটা আর্থিক অনুদান দিয়ে থাকে। তবে এবছর জনপ্রতি যে অনুদান দিয়ে থাকে সেটা বাড়িয়ে এবার বেশি দেয়ার জন্য চেষ্টা চলছে।
